ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মাদারীপুরে কলেজছাত্রের এলোভেরার ছাদ বাগান  

প্রকাশনার সময়: ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৫:২২

কলেজ শিক্ষার্থী পড়াশুনা ও চাকরির পাশাপাশি শখের বশে এলোভেরা চাষ করছেন সদর উপজেলার সাগর হোসেন মাতুব্বর। বর্তমানে তার ছাদ বাগানে বড় আকারের অর্ধশতাধিক গাছ ও প্রায় শতাধিক চারা গাছ রয়েছে। একতলা বিল্ডিং এর ছাদের উপর সাগর গড়ে তুলেছেন এই এলোভেরার বাগান। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলসহ বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতল ও নানা ধরণের পরিত্যক্ত পাত্রে লাগিয়েছেন এলোভেরা গাছ। তেমন কোন খরচ ছাড়াই এই বাগান দিনে দিনে বড় হচ্ছে। বর্তমানে তার বাগানে বড় আকারের অর্ধশতাধিক ও শতাধিক চারা গাছ রয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পানিছত্র টিবি ক্লিনিক সড়কের হিজলতলা মসজিদ সংলগ্ন এলাকার মাসুদুর রহমান খোকন ও মোসা. ইরা বেগমের ছেলে সাগর হোসেন মাতুব্বর। রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করেন। সাগর বর্তমানে কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার পরিচালনার কাজ করছেন। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন ধাপে ধাপে স্মার্ট কার্ড বিতরণের কাজ করেন।

এ ব্যাপারে সাগর হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘এলোভেরা গাছ লাগানোর শুরুটা ছিলো আমার মায়ের অসুস্থতার জন্য। ২০২০ সালের শেষে দিকে মা পেট ব্যথাসহ নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আমার একজন পরিচিত ডাক্তার বলেন মাকে এলোভেরার সরবত খাওয়াতে। তখন এলোভেরা বাজার থেকে কিনে এনে মাকে সরবত খাওয়াতাম। কখনও কখনও বাজারে এলোভেরা পাওয়া যেতো না। তাছাড়া প্রতিদিন কিনতে সমস্যায়ও পড়তে হতো। সে সময় আমার চাচা মো. আওলাদ হোসেন মাতুব্বরের পরামর্শে ও তার নিদের্শনায় ২টি চারাগাছ দিয়ে এলোভেরা লাগানো শুরু করি। মা এলোভেরার সরবত খেয়ে অনেক উপকার পান। এতেই গাছ লাগাতে উৎসাহ পাই। এখন অবশ্য শখের বশেই এই গাছ চাষ করছি। আমার পড়াশুনা ও চাকুরী করার জন্য অনেক সময় গাছের যত্ন নিতে পারি না। সে ক্ষেত্রে আমার ছোট ভাই রায়হান সজল ও সোহান এবং বোন হুমায়রা জান্নাত শোভা এলোভেরা গাছের যত্ন নেন। বড় গাছের পাশ দিয়ে নতুন চারা হয়। তখন সেই চারাগুলো তারা বিভিন্ন টপে রোপণ করেন। মাত্র ২টি গাছ নিয়ে ছাদ বাগান শুরু করলেও এখন আমার বাগানে অর্ধশতাধিক বড় গাছ ও শতাধিক চারা গাছ আছে।’

সাগরের ভাই রায়হান সজল বলেন, ‘বিভিন্ন কাজের জন্য গাছের যত্ন নেয়া সম্ভব হয় না। তবে নিয়মিত যত্ন নিতে পারলে এগুলো আরো বৃদ্ধি পেতো। তবে যে কেউ ইচ্ছে করলেই ছাদে, বারান্দায় বা বাড়ির উঠোনে এলোভেরার বাগান করতে পারেন। এই এলোভেরা যেমন উপকারী তেমনি এটি বিক্রি করেও লাভবান হওয়া সম্ভব। তবে আমরা এখনও বিক্রি শুরু করিনি। তবে কারো প্রয়োজন হলে তাকে বিনামূল্যেই দিয়ে থাকি। এতে মানুষের অনেক উপকার হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে মানবাধিকার কর্মী আয়শা সিদ্দিকা আকাশী বলেন, ‘এলোভেরা মূলত একটি ঔষধী গাছ। এই গাছের কান্ড বা ডগা পেটব্যথা, ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ নানা রোগ নিরাময়ে বিশেষ উপকারী। আমি নিজেও এই গাছের কান্ড ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছি। এলোভেরা চাষ সহজ এবং সাশ্রয়ী। এর দ্বারা বাড়তি আয়ও সম্ভব।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অভ নেচারের প্রতিষ্ঠাতা রাজন মাহমুদ বলেন, ‘সাগরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সাগরের এই ছাদ বাগান দেখে অনেকেই উৎসাহ পাবেন। এলোভেরা সৌন্দর্যের পাশাপাশি একটি ঔষধি গাছ। এই গাছের অনেক উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া যে কেউ চাইলে এলোভেরা চাষ করে তা বিক্রি করে আয়ও করতে পারবেন। ছোট ছোট টপে এই গাছগুলো লাগানো যায়। তাই বাজার থেকে টাকা দিয়ে টপ কিনে না এনেও নিত্যপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিকের বোতল বা পরিত্যক্ত কোন পাত্রে এই গাছ লাগানো যায়। এলোভেরা গাছের পাশ দিয়েই ছোট ছোট চারা জন্মে।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ