ইতোমধ্যেই শীতের শাকসবজি চলে এসেছে বাজারে। নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগে বাজার দখল করায় চাহিদার সুবাধে বিক্রিও হচ্ছে ভালো। এতে বেশ লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাজারে প্রতিনিয়ত শাকসবজি আসছে। চাহিদা থাকায় বাজারে আনার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রিও হয়ে যাচ্ছে। দামও ভালো। ফলে নজরে আসছে কৃষকের মুখে চওড়া হাসি। বলা হচ্ছে, এই সবজির কারণে গ্রামীণ জনপদে আশ্বিন-কার্তিকে যে একটা অভাব থাকে, সেটা চোখে পড়ছে না।
জানা গেছে, গফরগাঁওয়ের চরআলগী ইউনিয়নে শাকসবজির আবাদ হয় অনেক বেশি। এখানকার চাষিরা শীতের সবজি আগাম বাজারে তোলার কথা মাথায় রেখে আবাদ শুরু করেন। ফলনও হয় ভালো।এখানকার শাকসবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানেও যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ১৮শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১শ’ হেক্টর বেশি। তার মধ্যে আগাম সবজি চাষ হয়েছে ১২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের বেগুন চাষী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘৭০ শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করেছি। ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। ৭ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলে এই ৭০ শতাংশ জমি থেকে বর্তমান যে দাম আছে তা ১ মাস থাকলে দুই লক্ষ টাকার উপরে বেগুন বিক্রি করতে পারব।’
অপর বেগুন চাষী কলিম উদ্দিন বলেন, ‘আগাম বেগুন চাষ করে ৩ হাজার টাকা খরচ বাদে ২ কাঠা জমিতে বেগুন চাষ করে ৮ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। বাজারের পরিস্থিতি এরকম থাকলে ৭০ হাজার টাকার মত বিক্রি করা যাবে।’
শসা ও বেগুন চাষী খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা কালীন সময়ে সৌদি আরব থেকে ছুটিতে এসে আর যেতে পারিনি। তারপরই বাবার সম্পত্তিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করি। আগাম দেশি শসা ও মুলা চাষ করে গত ১৫ দিনে মুলা ও শসা বিক্রি করেছি ৯৫ হাজার টাকা। বাজারের যে দাম আরও ২ মাসের বেশি সময় আগাম সবজি করতে পারবো। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মত বিক্রি হবে।’
এ ব্যাপারে গফরগাঁও জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কৃষকদের মাঝে কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণের নির্দেশে করোনা মহামারী কালে বিনা মূল্যে সার, বীজ ও সার্বক্ষনিক তদারকী করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। বর্তমান সময়ে বাজারের সবজির উচ্চ মূল্যে কৃষক লাভবান। উপজেলা ১৫টি ইউনিয়নে ১২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি চাষ হয়েছে। বাজারে ভালো দাম থাকায় কৃষক খুশি। কৃষক তাদের পতিত জমি ও ফসলি জমিতে আগাম সবজি চাষ করে তা বাজারে বিক্রি করে ভাল দাম পাচ্ছেন।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ