ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হাওরে গান রক্ষায় তরুণীদের মহুয়া ধামাইল দল

প্রকাশনার সময়: ১৬ নভেম্বর ২০২১, ২০:১০

হাওরাঞ্চলে বিলুপ্তপ্রায় ধামাইল গান রক্ষা ও প্রসারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর একদল তরুণী। উপজেলার নগর ইউনিয়নের তাতিয়া গ্রামের ওই তরুণীরা সম্প্রতি নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন গ্রামে আয়োজন করেছেন ধামাইল গানের আসর। ১৮ জন মিলে ‘মহুয়া ধামাইল দল’ নামে দলবদ্ধ হয়ে তারা আশপাশের গ্রামে বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাশ্রমে এ আসর বসান। এমনটি জানিয়েছেন দলটির নেত্রী শেফালি সরকার।

তিনি জানান, হাওরাঞ্চলে ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিকভাবে রয়েছে ভিন্নতা, তেমনি রয়েছে আলাদা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বিশেষ করে এ ঐতিহ্যের অন্যতম হলো ধামাইল গান। অথচ ইন্টারনেটের অপব্যাবহার আর অপসংস্কৃতির ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে গানগুলেঅ। তাই ঐতিহ্যের এ ধামাইল গানকে টিকিয়ে রাখতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর্থিক সহায়তা পেলে দূর-দুরান্তের গ্রামে এ গানের আসর বসানো সম্ভব হতো বলে জানান শেফালি।

সংস্কৃতির উৎকর্ষতার জন্য ধামাইল গানের বিকল্প নেই- এমন মন্তব্য করে খালিয়াজুরী উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক জহরলাল দেব রায় বলেন, শত বছর পূর্বে ধামাইল গানের আবির্ভাব ঘটে। এ গানের প্রবর্তক লোকসংগীতের পুরোধা সাধক কবি রাধারমন দত্ত। এ গান সৃষ্টিতে অবশ্য অনেকেই অবদান রেখেছেন। গান রচয়িতারা প্রায় সবাই হাওরাঞ্চলের বাসিন্দা। তারা নিজেদের লোক-কৃষ্টিকে গানের মাধ্যমে সমৃদ্ধভাবে তুলে ধরায় এ গান অঞ্চলটিতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে ঐতিহ্যে রূপান্তরিত হয়েছিল। এখন প্রায় এক যুগ ধরে ধামাইল গান বিলুপ্ত হতে চলছে। হাওরাঞ্চলের বিয়ে, পূজা-পার্বনসহ প্রায় সব ধরনের অনুষ্ঠানের নান্দনিকতা বাড়িয়ে দেয়া এ গানের ছন্দ আর সুর ঠিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি নানান পৃষ্ঠপোষকতা।

খালিয়াজুরী সদরের সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব তারা প্রসন্ন দেব রায় ও তাতিয়া গ্রামের নিশিকান্ত সরকারসহ স্থানীয় অনেকেই দাবি জানিয়েছেন, হাওরাঞ্চলের বিলুপ্ত প্রায় ধামাইল, জারি, সারি, বাউল ও পালা গানসহ সব ধরনের লোকসংস্কৃতি রক্ষা ও প্রসারের স্বার্থে খালিয়াজুরীতে গড়ে তোলা হোক একটি ‘কালচারাল একাডেমি’। তারা বলেন, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক চর্চা ও প্রসারে সরকারি উদ্যোগে যেমনিভাবে কালচারাল একাডেমি স্থাপিত হয়েছে তেমনিভাবে খালিয়াজুরীতেও তা গড়ে তোলা প্রয়োজন।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, এ কার্যক্রমকে উজ্জবিত রাখতে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ