বর্ষার পানি নেমে যাচ্ছে। কাদাজলে আমন ধান কাটার পাশাপাশি খেতের নরম কাদা মাটিতে চলছে বিনাহালে রসুন লাগানোর উৎসব। কৃষক পরিবারের সদস্যরাও এ উৎসবের সক্রিয় অংশীদার। কারণ খেতের মাটি শুকিয়ে গেলে চাষের উপযোগিতা হারাবে খেত। এ জন্য বাড়ছে কৃষক পরিবারগুলোতে ব্যস্ততা।
এদিকে কৃষকরা বলছেন রসুনের ন্যায্য মূল্য না পেলেও কৃষি উপকরণের দাম বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে চলতি মৌসুমে রসুন চাষে প্রতি বিঘায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ব্যায় হচ্ছে।
গুরুদাসপুরসহ চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রসুন চাষকে ঘিরে কর্মমুখর হয়ে উঠেছে কৃষক পরিবারগুলো। কৃষাণী, কিংবা তাদের নিয়োগ করা মহিলারা রসুন থেকে কোয়া ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাদ যাচ্ছে না বাড়ির কিশোর-কিশোরীরাও। অধিকাংশ পরিবার গ্রামের মহিলাদের রসুন ভাঙার কাজে নিয়োগ করেছেন। এ জন্য প্রতিমণ রসুন ভাঙার মজুরি দেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দিতে হচ্ছে। একমণ রসুন ভাঙতে সময় লাগে দুই দিন। পাশাপাশি চলছে জমি প্রস্তুতসহ রসুন রোপণের কর্মযজ্ঞ।
গুরুদাসপুরসহ চলনবিলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষি উপকরণ বীজ, সার-কীটনাশক, সেচ, নিড়ানী, শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধির কারণে গত বছরের তুলনায় এবছরে রসুন চাষে প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। তবে রসুনে মূল্য না পেলেও রসুনে সাথী ফসল তরমুজ ও বাঙ্গী চাষ করে কিছুটা লাভ হওয়ায় এখনো এই আবাদ ধরে রেখেছেন কৃষকরা।
চাষ পদ্ধতি : আমন কাটার এক দুই দিনের মধ্যে ধানের খড় (লারা) তুলে জমি প্রস্তুত করতে হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সার-কীটনাশক দিয়ে কাদার ওপরে রসুনের একটি করে কোয়া রোপণ করতে হয়। রোপণকৃত রসুনের খেত ধানের খড় বা কচুরি পানা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ঢেকে দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যই রসুনের চারা গজায়। তবে রসুনে সাথী ফসল হিসাবে বাঙ্গি চাষের জন্য রসুনরে জমিতেই দুই হাত অন্তর অন্তর আলাদা জায়গা রাখা হচ্ছে। রসুন উঠে যাওয়ার পর বাঙ্গীর চারা ছড়িয়ে পড়ে। একই জমিতে একই সময়ে সীমিত খরচে দুই ফসল পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা রসুন চাষে ঝুঁকছে, হচ্ছে লাভবান।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ