রাজশাহী নগরীসহ পাশ্ববর্তী বাঘা-চারঘাট এলাকাজুড়ে বিস্তৃর্ণ পদ্মা নদীর চরে ফলছে সোনার ফসল। বর্ষাকালে নদীতে পানিতে টইটম্বর থাকে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীর অধিকাংশ এলাকাজুড়ে চর পড়ে। এই চরে ফলে সোনার ফসল। রাজশাহী নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিমে পদ্মা নদীর একটি চর এলাকার নাম চরখিদিরপুর।
শীত মৌসুমে চরখিদিরপুরসহ বাঘা-চারঘাটে পদ্মার চরাঞ্চলে শীতকালীন সবজিসহ পেয়ারা বাগান গড়ে উঠেছে। বর্তমান বাজারে সবজির দাম বেশি থাকায় শীতকালীন সবজি নিয়ে কৃষকরা ব্যাপক আনন্দিত। রাজশাহীর পদ্মা নদীর বিস্তৃর্ণ চর এলাকাজুড়ে শীতকালিন সবজি চাষে কৃষকের চোখে এখন রঙিন স্বপ্ন। পেয়ারা, টমেটো, বেগুন, ফুলকপি, বাধা-কপিসহ বিভিন্ন ফসলে চরাঞ্চল ভরে উঠেছে। যেন সবুজের সমারোহ। বন্যা পরবর্তী সময় চরে পলিবেষ্ঠিত বেলে-দোআঁশ মাটিতে চাষীরা ফলিয়েছেন সোনার ফসল। চরাঞ্চলে সবজির প্রাচুর্য দেখে যে কারও চোখ জুড়াবে। আগের তুলনায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন চরাঞ্চলের কৃষক।
রাজশাহীর চরখিদিরপুর গ্রামের চাষীরা জানান, বর্ষাকালে পদ্মানদীতে পানি থাকলেও এখন তা শুকিয়ে পলি পড়েছে। ফলে চর এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। নদীতে চর জেগে ওঠা এসব জমিতে এখন, টমেটো, পেয়ারা, বেগুন, ফুলকপি, বাধা-কপিসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করা হচ্ছে। যা স্থানীয় চাহিদা পুরনের পাশাপাশি রপ্তানি করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিশেষ করে প্রতি শীত মৌসুমে নদী বিধৌত চরাঞ্চল জুড়ে লক্ষ করা যায় হরেক রকম সবজি।
জেলার বাঘা উপজেলার নদী তীরবর্তী চকরাজাপুর ইউনিয়নের পলাশি ফতেপুর, দাদপুর, কালিদাসখালী, কলিগ্রাম, টিকটিকি পাড়া, করারি নওসারা, সরের হাট, চাঁদপুর এসব চরে এবার চাষ হচ্ছে আলু, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাও, মিষ্টি কুমড়া, সিম, করলা, পুঁই ও লালশাকসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। পাশাপাশি চরাঞ্চলে চাষ হচ্ছে গম, ছোলা, ভুট্টা, মসুর, সরিষা ও বাদাম।
বাঘার পলাশি ফতেপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার শিকদার জানান, তিনি ১০ বিঘা জমিতে শীত কালিন শাকসবজি হিসেবে কফি এবং বেগুন চাষ করছেন। এগুলো আবাদের পুর্বে জমিতে লাঙলের পরিবর্তে বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা হয়েছে। এর ফলে চাষাবাদের খরচ কমেছে। এ ছাড়া সেচের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে শ্যালো মেশিন। একটি মেশিনে ৩০ থেকে ৩৫ বিঘা জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়া যায়। তিনি আরও জানান, শ্যালো মেশিনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় ডিজেল। তবে এবার ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় সেচ খরচ বেশি পড়ছে।
বাঘার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল আলম জানান, চরাঞ্চলকে দেখলে এখন আর চর মনে হবে না। চারদিকে ফসলের চাষ হচ্ছে। গড়ে উঠেছে বিপুল পরিমাণ আবাদ। চরে সবুজের বিপ্লব ঘটছে। বিশেষ করে প্রতি শীত মৌসুমে নানা প্রকার সবজি উৎপাদনে রেকট ভঙ্গ করছে এই ইউনিয়ন। বর্তমানে শীত শুরু হওয়ার পর থেকে সবজি’র কমতি নেই চরাঞ্চলে।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ