ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজশাহী বাঘায় সাউ পেরিলা চাষে কৃষকের নতুন স্বপ্ন

প্রকাশনার সময়: ১৩ নভেম্বর ২০২১, ১৯:৫৮

রাজশাহীর বাঘায় মনিগ্রাম ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নে এবার প্রথম ৩ বিঘা জমিতে সাউ পেরিলা-১ (ভোজ্য তেল) চাষ করা হয়েছে। এই পেরিলা (ভোজ্য তৈল) দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, জাপান, ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভোজ্য তেল হিসাবে ব্যবহার হয়। বাংলাদেশেও পরিক্ষামূলক এটি চাষ করা হয়েছে। রাজশাহী বাঘা উপজেলায় এই পেরিলা চাষে কৃষকের চোখে নতুন স্বপ্ন দেখা দিচ্ছে। জমিতে ইতিমধ্যে পেরিলা গাছ ভালো হয়েছে। বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে পরীক্ষামূলক পেরিলা চাষে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, খরিফ-২ মৌসুমে বাঘা উপজেলার আমসহ বিভিন্ন ফল বাগান পতিত থাকে। উঁচু জমি, যেখানে পানি জমে না এবং হালকা ছায়া থাকে এমন স্থানে পেরিলা সহজেই চাষ করা যায়। মাত্র তিন মাসে সহজেই পেরিলা চাষ হয়। এটি আবাদ করে কৃষক সেই জমিতে রবি ফসল ফলাতে পারবেন। তাই এই ফসল চাষ লাভজনক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘পেরিলা সাধারণত বীজতলায় থেকে সংগ্রহ পর্যন্ত প্রায় ৯০-১০০ দিন সময় লাগে। জুলাই মাসে বীজতলায় বীজ বপণ করে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে চারা জমিতে রোপণ করা যায়। পেরিলায় খুবই কম পরিমাণ সার লাগে। রোগ-বালাই কম। বিঘা প্রতি মাত্র ৩-৪ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ পড়ে। বিঘা প্রতি প্রায় ৪ মণের মত ফলন পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ হাজার টাকা। ফলে অল্প পরিশ্রম ও ব্যয়ে পতিত জমিতে পেরিলা চাষ লাভজনক বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা। দেশে ভোজ্য তেল সরিষা, সয়াবিন তেলের ঘাটতি পুরণে বাংলাদেশের ১৭ টি জেলায় প্রথম পেরিলার চাষাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।’

পেরিলার পুষ্টি গুণ সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘পেরিলা তেলের প্রধান বৈশিষ্ট্য উচ্চমাত্রায় ৫১% ওমেগা-৩ এবং ফ্যাটি এসিড বা লিনোলিনিক এসিড সমৃদ্ধ এটি। ২২% লিনোলিক এসিড বা ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ ফসল পেরিলা। এটি ক্ষতিকারক ইউরেসিক এসিড মুক্ত (০%) ও ৯২% অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। যা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী।’

বাঘা উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্বজন সরকার বলেন, ‘মৌ বাক্স স্থাপন করলে পেরিলার জমি থেকে মধু আহরণ করা সম্ভব। এছাড়া, কচি পেরিলার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় এবং পেরিলার পাতার চাও বানানো যায়।’

বাঘার কিশোরপুর ও হেলাল পুর গ্রামের পেরিলা চাষী সাজদার রহমান ও সোহেল রানা বলেন, ‘বাঘা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় প্রথম বারের মত পেরিলা আবাদ করেছি। নিয়মিত কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ প্রদান করেন। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।’

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ