সুমিকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মজিবর। তাদের সম্পর্কে এতোটাই ভালোবাসা ছিলো যে শেষ পর্যন্ত তারা নিজেদের সারা-জীবনের সাথী করে নেয় । সংসারও সুখেই চলছিল এ প্রেমিক দম্পতির। হঠাৎ সুখের সংসারে কি করে দুঃখের আগুন লাগলো তা জানেন না মজিবর।
স্ত্রীকে নিয়ে যান শাশুড়ি। ফিরিয়ে আনতে শ্বশুরবাড়িতেও গিয়েছিলেন তিনি। তবে কাজ হয়নি। কিন্তু ভালোবাসার প্রিয়তমা স্ত্রীকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারছেন না মজিবর। ভালোবাসার মানুষটা যদি চোখের আড়াল হয়ে যায় তা কি হয়!
তাই প্রিয়তমা স্ত্রীকে ফিরে পেতে এবার অভিনব প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। গাছে গাছে টানিয়েছেন বিলবোর্ড। মজিবর তার বিল বোর্ডে লিখেন, ‘ও সুমিরে তোমায় ছাড়া ভালো লাগে না, তুমি যে আমারি, শুধু যে আমারি, চিরদিন কাছে থাকো না।’ বিলবোর্ডের নিচের লেখা, ইতি তোমার স্বামী মজিবর। যোগাযোগের জন্য নিজের মোবাইল নম্বরও দিয়েছেন তিনি।
মজিবর জানান, নরসিংদী শহরের নাগরিয়াকান্দি এলাকার জয়নাল গাজী ছয় মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে মজিবর হলো সবার ছোট। প্রায় ২০ বছর আগে মজিবর তার বাবাকে হারান। একমাত্র মায়ের আদরে বড় হয়ে উঠেন তিনি। কিন্তু বাবা মারা যাওয়াতে তার লেখাপাড়া করা হয়নি। এখন একমাত্র বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বসবাস করেছেন তিনি।
মজিবর পেশায় একজন ইজিবাইকের চালক। এ ইজিবাইক চালিয়ে যা রোজগার করেন তা দিয়েই চলে তার সংসার।
মজিবর আরও জানান, ৩ বছর আগে নরসিংদী সাহেপ্রতার এলাকায় তার পরিচয় হয় শিবপুর উপজেলার কুমারটেক গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে সুমি বেগমের সঙ্গে। সুমি সাহেপ্রতার একটি বাসায় কাজ করতেন। এ পরিচয় থেকে তাদের দুইজনেরই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা হতো।
এরপর এক সময় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ সম্পর্ক থেকে একদিন নরসিংদীর এক কাজী অফিসে গিয়ে তারা বিয়ে করেন। এরপর স্ত্রী এবং মাকে নিয়েই মজিবরের সংসার।
কিন্তু প্রায় দেড় মাস আগে ইজিবাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরে মজিবর দেখেন তার স্ত্রী বাসায় নেই। শাশুড়ি লিপি বেগম তাকে নিয়ে গেছেন। পরদিন শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীকে আনতে চাইলে বাধা দেন শাশুড়ি লিলি বেগম। এ সময় মজিবর জানতে পারেন, সুমিকে শিবপুর উপজেলার বিসিক আমতলার একটি গার্মেন্টেসে চাকরি দিয়েছেন তার মা।
এরপর মজিবর স্ত্রীকে ফিরে পেতে শিবপুর আমতলাসহ বিভিন্ন স্থানে গাছে গাছে বিলবোর্ড টানিয়েছেন। সুমির কর্মস্থলে যাওয়ার পথে তাকে দেখানোর জন্য টানিয়েছেন বিলবোর্ড। উদ্দেশ্য একটাই, যাতে বিলবোর্ড দেখে সুমির মন গলে এবং তার কাছে চলে আসে।
মজিবর বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় বছরের প্রেম, তারপর বিয়ে। সুমিকে অনেক ভালোবাসি আমি। বিয়ের দেড় বছরে একবারও ঝগড়া হয়নি। হয়নি কোনো গালমন্দও। তাকে না পেলে বাঁচবো ন না। সুমিকে ফিরে পেতে আমি ২৫টি বিলবোর্ড টাঙিয়েছি।’
মজিবব আরও বলেন, ‘আমি সুমিকে মন থেকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। বর্তমান যুগে কোথাও কি দেখছেন ? স্ত্রী চলেগেছে তাকে ফিরে পেতে স্বামী পিছনে পিছনে ঘুরতে। আমার দীর্ঘ বিশ্বাস সে আমার কাছে ফিরে আসবে।’
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ