রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাপসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের মৃত্যু হয়। গতদিন ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৯ জনের প্রাণ ঝড়ে গেছে এই হাসপাতালে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ২০ জনের মৃত্যু হয়ছে।স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দাফনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ মৃত ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এছাড়া তিনজন করোন পজিটিভ হওয়ার পর ও একজন করোনা নেগেটিভ নিয়েও মৃত্যুবরণ করেছেন।
মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর সাতজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুইজন, পাবনার চারজন, নাটোরের দুইজন, নওগাঁর তিনজন, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরের একজন করে বাসিন্দা রয়েছেন।
এদিন হাসপাতালের আইসিইউতে মারা গেছেন ৩ জন , অন্যান্য ওয়ার্ডে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৭ জনের। হাসপাতালের ৪৫৪ টি শয্যার বিপরীতে বুধবার সকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে ৪৭০ জন।
চলতি মাসে গত সাতদিনের ব্যবধানে রামেক হাসপাতালে ১২১ জন মারা গেলেন। মৃত্যুর পরিসংখ্যান অনুয়াযী গত ১ জুলাই ২২ জন, ২ জুলাই ১৭ জন, ৩ জুলাই ১৩ জন এবং ৪ জুলাই ১২ জন, ৫ জুলাই ১৮ জন, ০৬ জুলাই ১৯ জন এবং ৭ জুলাই ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এই হাসপাতালে। এছাড়া গত জুন মাসে হাসপাতালের কেবল করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৩৫৪ জন।
হাসপাতালের ডেডিকেটেড কোরোনা ইউনিটে কোনো শয্যা খালি নেই। রুমের মেঝেতে এবং বারান্দায় বসে কোনো রকমে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে রোগীদের। গত এক মাসের অধিক সময়ে এই হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডাক্তার ও নার্সরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার নগরীর দুইটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৪৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। রাতে প্রকাশিত এই ফলাফলে দেখা গেছে, রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণের হার আগের দিনের চেয়ে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৯২ শতাংশে। গতদিন জেলায় ১৯১ জনের শরীরে করোনা শনাক্তের মধ্যেদিয়ে সংক্রমণের হার ছিল ২৯ দশমিক ০৩ শতাংশ।
ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার নগরীর পৃথক দুইটি ল্যাবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মোট ৫৬২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে পজেটিভ রির্পোট আসে ১১৬ টি। এদিন রাজশাহী জেলা ছাড়াও চাঁপাইনবাগঞ্জের ১১৫ টি নমুনায় ১৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের উর্দ্ধগতির কারনে রাজশাহীতে গত ১১ জুন থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় কঠোর লকডাউন চলছে। এছাড়া গত ১ জুলাই থেকে সারাদেশে জারি করা সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন পালিত হচ্ছে এই নগরীতে। ফলে সংক্রমণের হার কিছু কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ