ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে বেহাল সড়ক

প্রকাশনার সময়: ০৮ নভেম্বর ২০২১, ১০:২৪

চট্টগ্রাম ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরীর অধিকাংশ সড়কের বেহাল দশা। যখন তখন যত্রতত্র ওয়াসার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এখন নগরবাসীর জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এমন বেপরোয়া খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নগরীর অধিকাংশ সড়কই খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। নগরজুড়ে যেন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব চলছে।

একটি রাস্তা খোঁড়া শেষ হতে না হতেই আরেকটি রাস্তা কাটা শুরু হয়ে যায়। একই রাস্তা বারবার কাটারও অভিযোগ করেছেন অনেক নগরবাসী। রাস্তা কাটার মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা বা নিয়ম মানছে না এ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। রাস্তার পাশেই রাখা হচ্ছে রাস্তা কাটার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

ওয়াসার নতুন পানির লাইন স্থাপনের জন্য পুরো শহরজুড়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলমান আছে। এতে সংকীর্ণ রাস্তাগুলো আরো সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। রাস্তা কাটা শেষ হওয়ার পর তা ইট ও বালি দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে। এর ফলে নগরজুড়ে বায়ুদূষণের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা ভালো না থাকায় অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি নগরজুড়ে সড়কের বেহাল দশার কারণে প্রাণহানিও ঘটেছে। বর্ষা মৌসুমে এ ভোগান্তি যেন আরো কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ইট-বালি দিয়ে মেরামত করা রাস্তাগুলো হয়ে পড়ে কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল। গ্রীষ্মকালে নগরীতে বেড়ে যায় ধুলাবালির রাজত্ব। অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি কাজে নিয়োজিত গাড়িগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হয়। নগরীর আগ্রাবাদ, জামালখান, গণি বেকারি, চকবাজার, প্রবর্তক মোড়, অক্সিজেন, টাইগারপাস, বন্দরটিলা, বারিক বিল্ডিং, গোলপাহাড়ের মোড়, ফ্রি-পোর্ট, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালসহ বেশ কিছু জায়গা ঘুরে সড়কের বেহাল অবস্থা লক্ষ করা গেছে।

আগ্রাবাদের বাসিন্দা মো. সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমাকে সকালে অফিসের জন্য বের হতে হয়। আগ্রাবাদ এমনিতেই খুব ব্যস্ত এলাকা। এখানে মোটামুটি যানজট লেগে থাকে। তার সাথে রাস্তা খোঁড়াখুড়ি করার কারণে আগের থেকে বেশি সময় জ্যামে বসে থাকতে হয়।’

সিটি করপোরেশন, সিডিএ ও ওয়াসা যদি সমন্বয় করে কাজ করে তা হলে এ দুর্দশা থেকে শিগগিরই পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘অক্সিজেন থেকে চকবাজার কলেজে আসতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগছে। কারণ অক্সিজেন থেকে চকবাজার সড়কের বিভিন্ন অংশে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে গাড়িতে জ্যামে বসে থাকতে হয়। সেই সাথে বেড়েছে বায়ুদূষণের মাত্রা। এসব রোডে চলাচলকারী বয়স্ক লোকদের সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হয়।’ এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রাম নগরীতে নতুন করে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য যেখানেই প্রয়োজন হচ্ছে সেখানে রাস্তা কেটে পানির লাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।

আর যেখানে বোয়িং দিয়ে কাজ হচ্ছে সেখানে রাস্তা না কেটে বোয়িং দিয়ে পাইপ লাইন বসানো হচ্ছে। তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কাজে সাময়িক একটু কষ্ট তো হবে। সাময়িকভাবে রাস্তা কাটার কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যত কম সময়ে দ্রুত কাজের মাধ্যমে কাজ শেষ করা যায় সেইভাবে কাজ করছি।

তিনি বলেন, আমরা সড়কে পাইপ লাইনের কাজ শেষ করে তা সংস্কারের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিয়ে থাকি। তারা তাদের সুবিধা মতো সড়ক সংস্কার কাজ করে থাকে। ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েক মাস পর্যন্ত চলবে ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ। একই সঙ্গে সড়ক ও গলিতে চলবে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। বর্ষা মৌসুমে নগরীর আরো গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলবে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এই জন্য আরো দুর্ভোগ পোহাতে হবে নগরবাসীকে।

ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুধু রাতে করার কথা থাকলেও বেশ কিছু সড়কে দিনের বেলায়ও কাজ চলমান রয়েছে। সড়কের একাংশ দিয়ে কাজ করে অন্য অংশ চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা থাকলেও নগরীর অনেক জায়গায় সড়ক সরু হওয়ার কারণে পুরোপুরি যান চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ