ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আলোকিত গ্রামীণ নারী সম্মাননা পেলেন সাবিত্রী হেমব্রম 

প্রকাশনার সময়: ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১৯:৪৪

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করেন তরুণ নারী সাবিত্রী হেমব্রম। গ্রামে গ্রামে ঘুরে তরুণ নেতৃত্বও তৈরি করছেন তিনি। রাজশাহীতে যখন করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিলো, তখন গ্রাম পর্যায়ে হ্যান্ডমাইক সচেতনতা বৃদ্ধি করেছেন তিনি। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সুখ দুঃখে, অভাব অনটনে পাশে থাকেন সাবিত্রী। সেই সাবিত্রীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

আলোকিত গ্রামীণ নারী সম্মাননা- ২০২১ পেয়ছেন আদিবাসী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি সহ-সভাপতি ও রাহালা রিমিল ডান্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবিত্রী হেমব্রম। বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে আলোকিত শিশুর উদ্যোগে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহায়তায় সারাদেশ থেকে ৩ জনকে নেতৃত্ব ও ৩ জনকে উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে মোট ৬ জনকে ‘আলোকিত গ্রামীণ নারী সম্মাননা’ দেওয়া হয়।

‘গ্রামীণ নারী দিবসের দাবি, ঘরে ঘরে নারীর কাজের স্বীকৃতি’ শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এর সহায়তায়, আলোকিত শিশু ও ভলান্টিয়ার অপর্চুনিটির গত ০৫ নভেম্বর ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের কনভেনশন হলে এই সম্মাননা প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মাননা পদক প্রদান করেন বাংলাদেশ সরকারের সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত। এছাড়াও নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সফল নারীরা উপস্থিত থেকে অনুপ্রেরণা মূলক বক্তব্য রাখেন। এ সময়ে দেশবরেণ্য ব্যাক্তি বর্গের উপস্থিতিতে দেশর বিভিন্ন সমাজ ও নারী উন্নয়নে গ্রামীণ নারীদের যুদ্ধজয়ের গল্প গুলি উপস্থিত দর্শকদের মাঝে প্রেরণা যোগায়।

সাবিত্রী হেমব্রম তার নিজ জীবনের সংগ্রামী বক্তব্যে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের আদিবাসীদের জীবন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। আমাদের আদিবাসীদের সকলেই বসবাস প্রায় প্রান্তিক পর্যায়ে। আদিবাসীরা সুবিধাবঞ্চিত, অধিকারবঞ্চিত, শিক্ষার হার কম, অতি দরিদ্র সীমার নীচে আমাদের বসবাস। অর্থাৎ মূলধারার জনগোষ্ঠী থেকে অনেকটা পিছিয়ে। এই সকল সামাজিক বাস্তবিক চিত্র দেখে মনে হয়েছে আমার নিজের জাতির জন্য, নিজ জনগোষ্ঠীর মানুষের জন্য, দেশের জন্য কিছু করার দরকার। আমার এ চিন্তা ভাবনাকে সামনে রেখে নিজ উদ্যোগে আদিবাসী সমাজের মানুষকে অধিকার বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করি। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার, মানবাধিকার বিষয়ে তাদের জানানো এবং মানবাধীকার লঙ্ঘীত হলে করণীয় সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে থাকি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে আমি কিছু তরুণ নেতৃত্বও তৈরি করার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে আমার নেতৃত্বে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তরুণ তরুণী আমার সাথে কাজ করে চলেছে। শুধু মাত্র অধিকার প্রতিষ্ঠায় নয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সুখ দুঃখে, অভাব অনটনে পাশে থাকার চেষ্টা করি।’

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস মহামারী পরিস্থিতিতে খাদ্য সহায়তা ও সাহায্য করি। এছাড়া প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে হ্যান্ডমাইক হাতে করে করোনা সচেতনতা কাজও করেছি। গণমাধ্যম কর্মীরা আমার সেই চিত্রও তুলে ধরেছেন। এমনকি নারীর প্রতি বিভিন্ন সহিংসতায় সুষ্ঠ ন্যায় বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে ও মনোবল ধরে রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আর স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ, লবিং এবং এ্যাডভোকেসি করে আমরা করে থাকি। এছাড়াও আদিবাসীদের সংস্কৃতি চর্চা ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০১৭ সাল থেকে ‘রাহালা রিমিল সাংস্কৃতিক নৃত্য দল’ প্রতিষ্ঠা পরিচালক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, রাজশাহীতে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে সাবিত্রী হেবব্রমের গ্রাম পর্যায়ে হ্যান্ডমাইক নিয়ে সচেতনতা তৈরীর খবর প্রকাশ করেছিল দৈনিক নয়া শতাব্দী। গত ২৮ জুলাই দৈনিক নয়া শতাব্দী পত্রিকায় ‘করোনা সচেতনতায় হ্যান্ডমাইক হাতে গ্রামে গ্রামে ঘুরছেন সাবিত্রী হেমব্রম’ শিরোনাম খবর প্রকাশিত হলে বিভিন্ন মহলে প্রসংশিত হন সাবিত্রী হেমব্রম।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ