কক্সবাজারের বৃহত্তর উপজেলা চকোরিয়া পৌরশহরে চলছে বেপরোয়া সড়ক চাঁদাবাজি। পৌরসভা ও আরকান শ্রমিকের নাম দিয়ে চাঁদা আদায় করলেও জবাবদিহি করতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশকে। চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকায় প্রায়শই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হলেও কোন সুরাহা হয়নি এখনও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এনসিসি ব্যাংকের সামনে পুরাতন এস. আলম কাউন্টার ও থানা রাস্তার মাথায় যানজট নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই তিনটি স্পটে পৌরসভা, আরাকান শ্রমিক সমিতি ও তিন চাকার গাড়ির শ্রমিকদের পক্ষ থেকে গাড়ি ভেদে ১০-২৫ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এই চাঁদা আদায় করতে গিয়ে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামে আধুনিক মানের বাস টার্মিনাল রয়েছে চকোরিয়া । ওই টার্মিনালে প্রতিটি লাইনের বাসগুলো কাউন্টারে নিয়ে যেতে সাবেক মেয়র ও বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম অনেকবার চেষ্টা করেছেন। এরপরও এনসিসি ব্যাংকের সামনে হানিফ, ইউনিক, শ্যামলীসহ কয়েকটি পরিবহনের টিকেট কাউন্টার থাকায় যাত্রী ওঠানামা করতে গিয়ে মহাসড়কের উপরেই পার্কিং করতে হচ্ছে গাড়িগুলো। এতে সড়কের যাতায়াত পথ সংকুচিত হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই বাস থেকে পৌরসভার নামে ২৫ টাকা, আরাকান শ্রমিক সংগঠনের নামে ২০ টাকা ও যে চাঁদা আদায় করে তার জন্য ৫ টাকা আদায় করা হয়।
এই চাঁদা আদায়ের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপিত হওয়ায় একটি মহল নিজেদের আড়াল করতে ট্রাফিক পুলিশকে দায়ী করে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে যাচ্ছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মেয়র আলমগীর চৌধুরী পৌরসভার পক্ষ থেকে সড়ক ইজারা দেয়া হয়নি এবং কোন চাঁদা আদায় তাদের জন্য করা হয় না বলে দাবি করেছেন।
অপরদিকে আরাকান শ্রমিক সংগঠনের নেতারা দাবি করছেন, তাদের ৯ জন লোক শৃঙ্খলা রক্ষায় চকোরিয়া কাজ করে তাদের জন্যই বাস থেকে ২০ টাকা করে নেয়া হয়।
চকরিয়া উপজেলা থেকে সদ্য পদোন্নতি পেয়ে বদলি হওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেছিলেন, বাস টার্মিনাল ছাড়া পৌরসভার অন্য কোথাও বাসের টিকেট কাউন্টার থাকলে তা সিলগালা করে দেয়া হবে। অন্য কোন শ্রমিক সংগঠনও সড়কে গাড়ি থামিয়ে কোন ধরণের চাঁদা বা ফি আদায় করতে পারবে না। সংগঠনভূক্ত চালকরা নিজেদের অফিসে গিয়ে চাঁদা প্রদান করবেন। এই নির্দেশনাও বাস্তবায়িত না হওয়ায় একদিকে বেড়েছে জনদূর্ভোগ, অপরদিকে অব্যাহত রয়েছে সড়ক চাঁদাবাজিসহ মহাসড়কে যানবাহন পার্কিং।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, প্রশাসন জরুরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করবেন।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ