ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাগরে ইলিশের আকাল, জেলে পল্লীতে হাহাকার

প্রকাশনার সময়: ০৪ নভেম্বর ২০২১, ২১:১৩

সাগরে কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে ২২ দিনের অবরোধ। এখন আবার শুরু হয়েছে জাটকা শিকারে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা। এমতাবস্থায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর জেলেদের জালে ধরা পরছে না প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্খিত পরিমাণ ইলিশ। যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তা বিক্রি করে ট্রলারের তেল খরচ বহন করাই দায় হচ্ছে। এ কারণে চরম হতাশায় রয়েছেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার। মাথার উপর এনজিও এবং দাদন (সুদ) ব্যবসায়ীদের ঋণের কিস্তি ঝুলে থাকায় মহাচিন্তিত তারা।

জেলেদের দাবি নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তারা মাছ শিকারে বিরত থাকলেও পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে হানা দিয়েছেন। যে কারণে এখন সাগরে কাঙ্খিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।

জানাগেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুমের কারণে সাগরে ২২ দিন মাছ শিকার বন্ধ ছিল। এসময় দেশের অভ্যন্তরে জাটকা শিকার, ক্রয়-বিক্রয়, সংগ্রহ বা মজুত এবং পরিবহণের উপর সম্পূর্ণরূপে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে সরকার। টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাঁটার পর কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ পাওয়ার নতুন স্বপ্ন নিয়ে গভীর সমুদ্রে দলে দলে যাত্রা করে উপকূলীয় জেলেরা। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী জেলেদের জালে তেমন পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে না। যা পাচ্ছেন, তা বিক্রি করে তেল খরচ বহন করাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

সরেজমিনে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ জেলে পল্লিতে গিয়ে দেখা যায়, শত শত মাছ ধরার ট্রলার এবং নৌকাগুলো ঘাটে নোঙ্গর করা আছে। জেলেরা কেউ ট্রলারে বসে আছে, আবার কেউবা ভেরিবাঁধের পারে বসে ছেঁড়া জাল সেলাই ও নতুন জাল গুছিয়ে সময় পাড় করছেন। এসময় জানতে চাইলে জেলেরা জানান, ইলিশ না পাওয়ায় অনেক ট্রলার সমুদ্র থেকে ফিরে এসেছে। তাই সাগরে না গিয়ে ঘাটে নোঙর করে আছেন তারা।

চরমোন্তাজের জেলে আল-আমিন মাঝি জানান, আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে, তবুও সাগরে মাছ নেই। গত সপ্তাহে জাল ট্রলার নিয়ে সাগরে গেছিলাম। তেল ও খাবার কেনার জন্য ২২ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু মাছ বিক্রি করে পাইছি মাত্র ৭ হাজার টাকার। এত টাকা ঘাটতি হলে ঋণের বোঝা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। এ জন্য সাগর থেকে ফিরে আসার পর এইবার আর যাই নাই। মাছ পরা শুরু করলে আবার যাব।

একই এলাকার জেলে খলিল মুন্সী জানান, সরকার ২২ দিনের অবরোধ দিছে। আমরা আইন মেনে মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলাম। কিন্তু সেই সময়ে বঙ্গোপসাগরে বংলাদেশের সিমানায় এসে মাছ শিকার করে নিয়ে গেছে। এখন অবরোধ শেষ হইছে। আমরা সাগরে গেছি, জাল ফেলে দেখি মাছের দেখা নাই। এক সপ্তাহ সাগরে থাকতে যে পরিমাণ খরচ হয়, মাছ বিক্রি করে তা উঠে না।

রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বাবুল জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেরা সাগরে মাছ ধরা থেকে বিরত ছিল। তাই এখন সাগরে তুলনমূলক বেশি ইলিশ ধরা পরার কথা। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। আশা করি, ইলিশ ধরা পরবে।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ