সমুদ্রে মাছ শিকারের ওপর থাকা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত সোমবার। ফলে অপেক্ষায় প্রহর কেটেছে উপকূলে বসবাসরত সমুদ্রগামী জেলেদের। সরব হয়ে উঠেছে নদীবিধৌত জেলেপল্লীগুলো। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে র্দীঘদিন পর নতুন স্বপ্ন নিয়ে আবারও গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ফিরতে আগ্রহী উপকূলীয় জেলেরা। সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য জাল, ফিশিং বোটসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রস্তুতকরণের প্রস্তুতি চলছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার জেলেপল্লীগুলোতে।
সরজমিনে গিয়ে জেলেপল্লীতে দেখা মিলে, কেউ ট্রলার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় মনোযোগ দিচ্ছে। কেউবা জলসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে তুলছেন। আবার কেউ কেউ মাছ শিকারে নতুন স্বপ্ন নিয়ে গভীর সমুদ্রে যাত্রা শুরু করছে। মোট কথায়, মা ইলিশ রক্ষায় দীর্ঘ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় মহাখুশি তারা।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় প্রত্যেক জেলের মাথার উপর এনজিও অথবা দাদন (সুদ) ব্যবসায়ীদের ঋণের কিস্তি ঝুলছে। অধিকাংশ জেলেই তাদের সঞ্চয় ভেঙে নিষেধাজ্ঞার দিনগুলো কোনো না কোনোভাবে পার করছে। তবে জেলেরা আশাবাদী, ইলিশ শিকার করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা। কারণ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে মাছ শিকারে যায়নি তারা। তাই নতুন স্বপ্ন পূরনে জেলেরা এখন সাগর মুখি হচ্ছেন।
চরমোন্তাজের ট্রলার মালিকবর্গ মো. সুজন মৃধা জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় স্থবির হয়ে পড়ে ছিল তারা। ঘাটে ট্রলার নিয়ে অলস সময় পার করছিল এবং অপেক্ষার প্রহর গুনছিলো। এখন তাদের প্রাণ ফিরেছে। তিনি আশা করছেন, মা ইলিশ রক্ষায় সাগর ও নদীতে ২২ দিন মাছ শিকার বন্ধ ছিল। ফলে সাগরে মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে। জালে এখন বেশি মাছ ধরা পরবে। তা বিক্রি করে তাদের পরিবার স্বাচ্ছন্দ্যে ফিরবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বাবুল বলেন, ইলিশ মূলত সারা বছরই ডিম ছাড়ে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বেশি ডিম ছাড়ে। এজন্য প্রতিবছরের এই সময়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস্য অফিস উপকূলীয় সমুদ্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা পরিচালনা করে। যাতে ইলিশগুলো নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে। মা ইলিশ রক্ষায় এ উপজেলার জেলেরা শতভাগ নিষেধাজ্ঞা মেনেছে বলে তিনি জানান।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ