১১ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া মরিয়মকে (৩১) খুঁজে পেলেন মা। আপন ঠিকানা নামে আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে মরিয়মের একটি সাক্ষাৎকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মেয়ে মরিয়মের সন্ধান পায় তার পরিবার।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার কান্দানিয়া গ্রামের কচ্চারপাড়া এলাকার বাসিন্দা আমছর আলীর মেয়ে মরিয়ম। তবে আমছর আলী বহু বছর আগে অর্থাৎ মরিয়ম হারিয়ে যাওয়ার পূর্বেই কাঠাল খেতে গিয়ে গলায় আটকে মারা যান। মরিয়ম হারিয়ে যাওয়ার পর ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত গণপূর্ত অধিদপ্তরে (পিডব্লিউডি) কর্মরত মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ ও রাবেয়া আহমেদের কাছে নিজ সন্তানের মতোই বড় হন। মুসলেহ উদ্দিন ও তার স্ত্রী ঢাকার বাসা মুগদায় ১১ বছর পরম আদর যত্নে বড় করে তোলেন শিশু মরিয়মকে।
১১ বছর পর রোববার (৩১ অক্টোবর) রাতে আরজে কিবরিয়ার আপন ঠিকানা অনুষ্ঠানে হারিয়ে যাওয়া মরিয়ম ফিরে পায় তার পরিবারকে। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
মরিয়মের মা বেগম জানায়, তার দুই মেয়ে গাজীপুরের জয়দেবপুরে একটি গামেন্টসে চাকুরি করতো। সেখানের যাওয়ার জন্য তার সাড়ে ৭ বছরের মেয়ে মরিয়ম বায়না ধরে। পরে জয়দেবপুরে বোনদের বাসায় যায়। পরে দুই বড় দুই বোন সফলা ও লাইলীর সাথে মরিয়ম চিড়িয়াখানা দেখতে জয়দেবপুর থেকে ঢাকায় আসেন। চিড়িয়াখানায় জলহস্তি দেখার সময় ছোট্ট মরিয়ম পেছন থেকে হারিয়ে যায়। এরপর চিড়িয়াখানা এলাকায় টানা তিনদিন মাইকিং করেও মরিয়মের খোঁজ মেলেনি। এভাবেই কেটে যায় ১১ বছরের অধিক সময়।
মরিয়ম জানায়, হারিয়ে যাওয়ার পর এক ব্যক্তি তাকে একটি বাসায় নিয়ে যান। সেখানে কিছুদিন থাকার পর বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তা হারিয়ে ফেলেন। এরপর এক নারী রাস্তায় কাঁদতে দেখে মুসলেই উদ্দিন আহমেদ ও রাবেয়া আহমেদ দম্পতির বাসায় দিয়ে আসেন। এর ওই দম্পত্তি নিজেদের সন্তানের মতো করে দীর্ঘ ১১ বছর লালন পালন করেন। সেখানেই বড় হয়ে উঠেন মরিয়ম। এরপর ফেসবুকে কিবরিয়ার অনুষ্ঠান দেখে সাক্ষাৎ করেন। পরে এই সাক্ষাৎকার ভাইরাল হয়।
রোববার মা-বোন ও ভাইদের কাছে পেয়ে মরিয়ম তাদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বড় বোন সফলা বলেন, বোনের ছোট বেলার অনেক স্মৃতি আমার মনে আছে। বোনকে হারানোর পর সব সময় মন খারাপ থাকতো। তবে মায়ের বিশ্বাস ছিলো একদিন ঠিকই মরিয়ম ফিরে আসবে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ