রাজবাড়ীতে দুই দিনে শহর রক্ষা বাঁধের ১৫০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি গ্রামের গোদার বাজার ঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙনে প্রশাসনসহ পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন।
ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মূলবাঁধ ছুঁই ছুঁই অবস্থায় নদীর আগ্রাসীমূর্তি।পানি কমতে থাকায় নদীর স্রোত যেন দ্বিগুণ গতি নিয়ে আছড়ে পড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও তাদের বাহিনী নিয়ে বালুভর্তি জিওব্যাগ নৌকা থেকে ডাম্পিং করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে শহর তথা জেলাকে রক্ষার জন্য আশির দশকের দিকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পদ্মা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মোট ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নদীর তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৭ কোটি টাকা।
এছাড়া একই এলাকায় ড্রেজিং করা হয়। ড্রেজিংয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা। কাজের মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। কাজ বাস্তবায়ন করছে মেসার্স দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড (ডিবিএল)। কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ৩১ মে। পরে কাজের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়।
অপরদিকে গোদার বাজার এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকা সংস্কার কাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়। ব্যয় ধরা হয় ৭২ কোটি টাকা। পাঁচটি প্যাকেজে কাজ সম্পন্ন হয় চলতি বছরের ৩১ মে। ২৭ জুলাই থেকে এই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়।
রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটি পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত। উপজেলাগুলো হলো রাজবাড়ী, গোয়ালন্দ, পাংশা ও কালুখালী উপজেলা। এসব উপজেলার মধ্যে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় গুরুতর ভাঙনের শিকার হয়। প্রতিবছর সাধারণত পানি বাড়ার সময় ভাঙন দেখা দেয়। আবার পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে ইতিমধ্যে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আহাদ বলেন, ফরিদপুর থেকে প্রধান প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা এসে নদী শাসনের বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। নদীর গতিপ্রকৃতি বিষয়ে ঢাকার বিশেষজ্ঞ টিম এসে আরও গবেষণা করে আগামী দিনে কীভাবে কাজ করা যায়, সে উদ্যোগ নেয়া হবে। আপাতত নদীভাঙন ঠেকানোই মূল লক্ষ্য।
নির্বাহী প্রকৌশলী জানালেন, ভাঙন কবলিত ২০টি পয়েন্টে এ পর্যন্ত ১লাখ ১১হাজার জিওব্যাগ এবং ১১শ’জির টিউব ডাম্পিং করা হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ