খুলনায় চাকরির নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একটি প্রতারকচক্র। কোন প্রকার বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই দালাল চক্রের মাধ্যমে নারীদের ভালো চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। পার্ট টাইম চাকুরি করে পড়ালেখা ও নিজের খরচ বহনের আশার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অধিকাংশ নারী ও কলেজের ছাত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে খুলনায় বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল, ক্লিনিকে চাকুরি দেয়ার নামে এ সকল প্রতারক চক্র কাজ করছে। ওই সকল প্রতিষ্ঠানে রিসেপশনিস্ট, সিকিউরিটি গার্ড, একাউন্টস কর্মকর্তাসহ নানা পদে জনবল নিয়োগের কথা বলে চাকুরি প্রার্থী নারীদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে।
গত আগস্ট মাসে নগরীর সাতরাস্তা মোড়স্থ গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকে বিভিন্ন পদে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকজন নারীর সাথে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জামানতও নেয়া হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত সেই চাকুরির দেখা মেলেনি এ সকল প্রতারিত নারীদের। বরং জামানতের নামে নেয়া টাকা ফেরতের জন্য অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানের দিকে। তবে যে সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য জনবল নিয়োগের কথা বলে প্রতারণা করা হচ্ছে, ওই সকল প্রতিষ্ঠান এসব বিষয় কিছুই জানেনই না।
অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর গল্লামারী বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকায় “ইহান সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিঃ” নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এলাকাবাসী গত ১ বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানটি ওই এলাকায় দেখছেন। ‘বেকারত্ব মোচনই আমাদের লক্ষ্য’ এমন শ্লোগানও রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচিতি বোর্ডে। গত ১৭ আগস্ট ওই প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত মোঃ ইলিয়াছ বেশ কয়েকজন নারীকে চাকুরি দেয়ার নাম করে “ইহান সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিঃ’র নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামালের কাছে নিয়ে যান। তাদেরকে বেসরকারি হাসপাতালের রিসেপশনিস্ট পদে চাকুরির কথা বলে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কথিত জামানত নেন। এরপর তাদেরকে নানা ভাবে ঘুরপাক খাইয়ে চাকুরি দিতে পারেননি। কথিত জামানতের টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানাভাবে হয়রানি করা হয় তাদের। ওই সকল অসহায় নারীরা তাদের টাকা ফেরত ও প্রতারণার হাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।প্রতারণার শিকার খুলনার একটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জানান, জামানত হিসেবে টাকা নিয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইয়াছিন ও এমডি মোস্তফা কামাল। এক পর্যায়ে ইয়াছিন নানা ভাবে কু-প্রস্তাবও দিতে থাকে। এ সকল প্রতারণা বুঝতে পেরে টাকা ফেরত চাইতে গেলেও নানা ভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছি।
এ বিষয়ে ইহান সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিঃ’ নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কামাল বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের মারফত নগরীর গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকে জনবল সাপ্লাইয়ের কথা ছিলো। ইয়াছিন আমার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রে কোন স্টাফ না। তবে মৌখিকভাবে সে চাকুরি প্রার্থীদের নিয়ে আসে। চারজন কলেজ ছাত্রীর কাছ থেকে জামানত হিসেবে নেয়া টাকার মধ্যে তিনি সব টাকা নেননি বলেও জানান। তবে অভিযোগকারীদের টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন বলেও তিনি জানান। তবে, প্রতারণার বিষয়ে অভিযুক্ত ইয়াছিনের মুঠোফোনে বক্তব্য নিতে দফায় দফায় ফোন করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। এদিকে গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকের পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, ইহান সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিঃ নামের কোন প্রতিষ্ঠানকে আমাদের ক্লিনিকের জনবল নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়নি। তারা কেন বা কিভাবে তা করছেন সেটি তিনি অবগত নন।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ