রাজবাড়ী শহরের ধুঞ্চি গ্রামের গোদার বাজার এলাকায় শহররক্ষা বেড়িবাঁধে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভাঙনে অন্তত ৩০ মিটার এলাকার ব্লক বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে শহররক্ষা বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, পদ্মা থেকে শহর তথা জেলাকে রক্ষার জন্য ৮০’র দশকের শেষ দিকে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পদ্মা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য মোট ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নদীর তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৭ কোটি টাকা।
এছাড়া একই এলাকায় ড্রেজিং করা হবে। ড্রেজিংয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা। কাজের মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড। কাজ বাস্তবায়ন করছে মেসার্স দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড (ডিবিএল)। কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ৩১ মে। কাজের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়।
অপরদিকে গোদার বাজার এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকা সংস্কার কাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়। ব্যয় ধরা হয় ৭২ কোটি টাকা। পাঁচটি প্যাকেজে কাজ সম্পন্ন হয় চলতি বছরের ৩১ মে। ২৭ জুলাই থেকে এই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এরপর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে পদ্মার নদীর ব্লক দিয়ে সংরক্ষিত এলাকায় ভাঙন দেখা দিচ্ছে। ভাঙন রোধে বালুর জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ ফেলা হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজবাড়ীর পাঁচটি উপজেলার মধ্যে চারটি পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থিত। উপজেলাগুলো হলো রাজবাড়ী, গোয়ালন্দ, পাংশা ও কালুখালী উপজেলা। এসব উপজেলার মধ্যে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় গুরুতর ভাঙনের শিকার হয়। প্রতিবছর সাধারণত পানি বাড়ার সময় ভাঙন দেখা দেয়। আবার পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে ইতিমধ্যে কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। সবশেষ বুধবার বিকেলে পৌর এলাকার ধুঞ্চি গ্রামের গোদার বাজার এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় সিমেন্ট আনলোড করা হয়। আনলোড করা সিমেন্ট ট্রাকে করে শহরের নেওয়া হয়। এছাড়া পাশেই রয়েছে বালুর চাতাল। উপমন্ত্রী নদীর পাড় থেকে বালুর অবৈধ চাতাল সরানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটে নাই। সব মিলিয়ে কয়েকদিন পরপর ভাঙন দেখা দিচ্ছে। এতে করে গুরুতর হুমকিতে পড়েছে শহররক্ষা বাঁধ।ভাঙনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আহাদ। তিনি বলেন, ভাঙন বিষয়টি সিরিয়াস ভাবে নেওয়া হয়েছে। ভাঙন কবলিত স্থানে টিউব ব্যাগ ফেলা হবে। এবিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে। নদীর মরফোলজিক্যাল কারণে ভাঙন হচ্ছে। এখানে আমাদের আপাতত করার কিছু নেই।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ