উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বুধবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৬ টায় বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯ টায় ১০ পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬০সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় তিস্তার পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের তিস্তার দোমহনী পয়েন্টে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ২২টি চরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে ডিমলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ নামক স্থানে ১০০ মিটার স্পার বাঁধটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারীসহ ১০টি ইউনিয়নের ২২টি চর গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ। চরাঞ্চলের এসব বাড়িঘরে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি উঠেছে বলে জানান।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। রাত ১২টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) অতিক্রম করে। ফলে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর ইসলাম জানান, রাত থেকে মাইকিং করে ছাতুনামা, কেল্লাবাড়ী ও ভেন্ডাবাড়ি চরের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তারা পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নদী শাসন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষদের শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদ দৌলা জানান, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে তিস্তাার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে দেয়া হয়েছে।
কালিগঞ্জে স্পার বাঁধ ভাঙ্গণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটি চরের ভেতরে বাঁধ। তিস্তা নদীর উভয় তীরের বাঁধে কোন সমস্যা হয়নি। পাউবো’র লোকজন সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছে ওই এলাকায়। এবার তিস্তা পয়েন্টে এ মৌসুমের সর্বোচ্চ পানি প্রবাহ।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ