রাজশাহীতে এবার আমন চাষে ভাগ্য খুলছে কৃষকের। চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ৮০ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। গতবছর জেলায় আমন ধান চাষ করা হয়েছিল ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। এবার কিছু বেশি জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।
রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষি জমিতে এখন আমন ধান পাকা শুরু হয়েছে। কিছু কিছু উপজেলায় ধান কাটা-মাড়াই চলছে। করোনায় বিপর্যস্ত কৃষকদের ভাগ্য বদলে আমন ধান ভূমিকা রাখবে বলে জানান চাষীরা। এছাড়া এবার আলুতে লোকশান গুনতে হচ্ছে তাই ধানের দামে সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন এই অঞ্চলের কৃষক। তাদের দাবি ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলার দুইটি মেট্রোপলিটন থানাসহ ৯টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮০ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে।
এরমধ্যে মতিহার থানায় আমন ধান চাষ করা হয়েছে ২৬ হেক্টর জমিতে, বোয়ালিয়ায় ১০ হেক্টর, পবা উপজেলায় ৯ হাজার ৩১৫ হেক্টর, তানোর উপজেলায় ২২ হাজার ৫৮৯ হেক্টর, মোহনপুর উপজেলায় ২ হাজার ৬৪০ হেক্টর, বাগমারা উপজেলায় ৩ হাজার ৩৫ হেক্টর, দুর্গাপুর উপজেলায় ৪ হাজার ৬৯০ হেক্টর, পুঠিয়া উপজেলায় ৬ হাজার ১’শ হেক্টর, গোদাগাড়ি উপজেলায় ২৪ হাজার ৭৯৫ হেক্টর, চারঘাট উপজেলায় ৫ হাজার ২১০ হেক্টর এবং বাঘা উপজেলায় ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে এবার আমন ধান চাষ করা হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, এ বছর আমনের ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যেই বাজারে যারা আমন ধান বিক্রি করতে নিয়েছেন তারা ভালো দাম পেয়েছেন। তারা বলছেন, সরকার নিজের জন্য আমন ধান ও চাল কেনার যে দাম দিয়েছেন, সে কারণেই এবার আমনের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।
গোদাগাড়ী উপজেলার ধান চাষি পিন্টু জানান, অল্প পরিমাণ জমির ধান কাটা মাড়া সম্পন্ন হয়েছে। বাকি প্রায় সাড়ে ৬ বিঘা জমির ধান মাড়াইয়ের জন্য উঠানে রেখেছি। পাশের জমিগুলোতে প্রতি বিঘা ১৭ থেকে ১৯ মণ হারে ধানের ফলন হয়েছে। তিনি আরও জানান, এবছর জমিতে কারেন্ট পোকাসহ বিভিন্ন পোকার সংক্রণ তেমন একটা দেখা যায়নি। গত বছরের চেয়ে ধানের ফলনও ভালো হবে। এছাড়া ধানের দামও রয়েছে ভালো।
দুর্গাপুর উপজেলার ধান চাষি মোবারক হোসেন বলেন, বন্যায় আউশের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছিলাম। আবহাওয়া অনূকলে থাকায় এবং কোন ধরনের পোকামকড়ের সংক্রমণ না হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৭ থেকে ২০ মণ হারে ধান পাবো বলে আশা করছি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল আউয়াল বলেন, আবহওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা এবার আমনধানের বাম্পার ফলন পাবেন। অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ধান কাটা শুরু করছেন। তিনি বলেন, ধানের বিভিন্ন রোগবালাই এবং পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রত্যেক উপজেলাতে কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বারা কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ফলে এ বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়া দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ