নাটোরের গুরুদাসপুর থানায় আগতদের সেবায় ভিন্নমাত্রা যোগ হয়েছে। কিছুদিন আগেও এই থানায় পুলিশিং সেবা নিতে আসা সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে নানা ধারণা থাকলেও গত এক মাস যাবৎ পাল্টেছে থানার চিত্র।
থানায় আগত নারী-পুরুষসহ শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে চকলেট। থানায় সেবা নিতে আসা লোকজনকে সেবা প্রদানের পাশাপাশি আপ্যায়ন স্বরুপ বড়দেরকে চা-বিস্কুট আর শিশুদের একটি করে চকলেট দিচ্ছেন গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আব্দুল মতিন। থানায় মামলা, অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করতে আসা সেবাগ্রহীতারা পাচ্ছেন এই চা, চকলেট, বিস্কুট।
থানা পুলিশ সূত্রে জানাযায়, গত সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে যোগদান করেন মো.আব্দুল মতিন। যোগদানের পর থেকেই তিনি সেবাগ্রহিতাদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি যোগদানের পর থেকে গুরুদাসপুরে অপরাধ চিত্র পাল্টেছে। পাল্টেছে থানার চিত্রও।
যোগদানের ১ মাস ৬ দিনের মধ্যে ৫৮টি মাদক মামলা করেছেন। এই মামলায় গাজা, হিরোইন, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ প্রায় ৭০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে তার নেতৃত্বে আটক করেছে থানা পুলিশ । তাছাড়াও ওয়ারেন্ট ও সাজাপ্রাপ্ত ৮২জন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। থানায় যোগদানের পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কারণে কমেছে সকল অপরাধ প্রবণতা।
থানায় সেবা নিতে আসা উপজেলা পৌর সদরের বাসিন্দা নাহিদ জানান, থানায় একটি জিডি করতে এসেছিলেন তিনি। অফিসিয়াল কিছু কাগজপত্র হারানোর কারণে জিডি করতে এসেছিলেন থানায়। কিভাবে জিডি করবো বা কি করতে হবে বুঝতে না পেরে ওসি সাহেবের কাছে যান তিনি। মনে ভয় নিয়ে গেলেও ওসির ব্যবহারে তিনি আবেক আপ্লুত হয়ে যান। ওসি আব্দুল মতিন তাকে চা-বিস্কুট খাইয়ে বিনামুল্যে জিডি করিয়ে দেওয়ায় তিনি সত্যিই পুলিশিং সেবায় মুগ্ধ।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আব্দুল মতিন জানান, অপরাধ প্রবণতা কমাতে হলে প্রথমত সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের বন্ধু সুলভ আচরণ করতে হবে। থানায় যোগদানের পর থেকে উপজেলার প্রতিটি জায়গায় গিয়ে বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অপরাধ সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। কারণ অপরাধী যত বড় শক্তিশালি হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে।
আর থানায় আগত সেবাগ্রহীতাদের উদ্বুধ্য করার জন্য বড়দের জন্য চা-বিস্কুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়াও অনেক সময় নারীদের সাথে তাদের কোমলমতি শিশু সন্তানরাও আসে। মুলত তাদের জন্য চকলেট রাখা হয়েছে। মানুষ থানায় এসে যখন তার কাঙ্খিত সেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরবে তখন সমাজের অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে গুরুদাসপুর উপজেলাকে মাদক মুক্ত ও সকল অপরাধ থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ