রাজশাহী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সম্পন্ন করা উচ্চশিক্ষিত আলমগীর হোসেন অনলাইনে ইউটিউব ঘেটে গড়ে তুলেছেন পেয়ারা ও মাল্টা বাগান। সবেমাত্র বাগান থেকে পেয়ারা উঠা শুরু হয়েছে। এখন দিনে প্রায় আড়াই মন পেয়ারা উঠছে।
ভরা মৌসুমে সকল গাছ থেকে একসঙ্গে পেয়ারা সংগ্রহ শুরু হলে দিনে ৫০ মন পেয়ারা উঠবে তার বাগান থেকে। ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও দিনে ১৫ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে। এতে তার মাসিক আয় দাঁড়াবে ১৫ লক্ষ টাকা।
রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার সূর্য্যপাড়া গ্রামে ২৫ শতক জায়গায় আলমগীরের পেয়ারা ও মাল্টার বাগান। ৪০০টি পেয়ারা গাছ ও ৪০০টি মাল্টা গাছ রয়েছে তার বাগানে।
নয়া শতাব্দীর কাছে তুলে ধরেছেন তরুণ উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেনের সফলতার গল্প। আলমগীর হোসেন বলেন, ইউটিউবে চূয়াডাঙ্গা জেলার রফিকুল ইসলামের পেয়ারা চাষের ভিডিও দেখে আমি পেয়ার চাষে আগ্রহী হই। এছাড়া যশোর জেলার রফিকুল ইসলামের মাল্টা ও কমলা চাষের ভিডিও আমাকে মাল্টা চাষে অনুপ্রাণিত করেছে।
রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি যশোর থেকে ট্রেনে করে নওগাঁর আত্রাই স্ট্রেশনে আমার জন্য ৪০০টি মাল্টা চারা সরবরাহ করেন। ৭৫ টাকা মূল্যে প্রতিটি মাল্টা চারা ক্রয়ে আমার ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। একই রকম খরচ পড়েছে পেয়ারা চারাতেও।
জমি প্রস্তুত, সারসহ সবমিলিয়ে ২৫ শতক জায়গায় ২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছি। বর্তমানে পেয়ারা ও মাল্টা গাছে আমার বাগান ভরে গেছে। ইতিমধ্যে পেয়ারা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। ভরা মৌসুমের বাগান থেকে মাসে ১৫ লক্ষ টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে বলে ধারণা করছি। এছাড়া মাল্টা গাছে ফুল এসেছে। কিন্তু পরিপূর্ণ মাল্টা সংগ্রহ করতে তিন বছর সময় লাগবে।
সেই হিসেবে মাল্টা সংগ্রহে আরো দুই বছর সময় লাগবে। আলমগীর হোসেন আরও বলেন, বাগানে সাথী ফসল হিসেবে তরমুজ ও পেঁয়াজ চাষ করেছি। সেখান থেকেও আমার মোটা অংকের অর্থের সংস্থান হয়েছে। তরুণ উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেন জানান, রাজশাহী কলেজ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনের পর চাকুরির পিছনে না ছুটে আমি নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখি। ইউটিউবে কৃষি প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রতিবেদন দেখে আমার এই ধরণের বাগান করতে আগ্রহ জন্মে। তাই এই বাগান করেছি। আশা করছি এতে আমার স্বপ্নপূরণ হবে।
রাজশাহীর নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস আলমগীর হোসেন হিরণের পেয়ারা ও মাল্টা বাগান ঘুরে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, আলমগীর হোসেন আমার স্কুল জীবনের প্রিয় বন্ধু। আমার দেখা এক অসাধারণ মেধাবী ছাত্র সে। উচ্চশিক্ষা শেষে উদ্যোক্তা হওয়াই ছিলো তার একমাত্র স্বপ্ন। আজ তার স্বপ্ন বেগবান। সোমবার গ্রামে গিয়ে ওর পেয়ারা এবং মাল্টা বাগানে গিয়েছিলাম। হিরনের অধ্যাবসায় ও কঠোর পরিশ্রম দেখে মুগ্ধ হয়েছি।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ