ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সাকুয়া ইউনিয়নের গন্ডখোলা ফকিরবাড়ী এলাকার সজল মিয়ার সাত বছরের বছরের ছোট্ট ছেলে সালমান ‘বিরল’ রোগে রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাকে বাঁচাতে প্রায় সাড়ে ছয় বছর ধরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাবা সজল মিয়া নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। একমাত্র শেষ সম্বলটুকুও বিক্রি করে দিয়েছেন।
সালমানের ৬ মাস বয়স থেকে শরীরে ছোপছোপ দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে এ রোগে আক্রান্ত হয়।
দরিদ্র পরিবারের সাত বছরের ছোট্ট শিশু সালমানের স্থিরদেহ চোখে পড়বে তার গ্রামের বাড়ি ত্রিশালের গন্ডখোলা ফকিরবাড়ীতে গেলেই। দেহ নিথর হলেও চোখের হঠাৎ হঠাৎ কাঁপুনি জানান দেয় মরণ তাঁকে ঘায়েল করতে পারেনি। প্রায় সাড়ে ছয় বছর ধরে শিশু সালমানের জীবনের এ দুঃসময়ে পালাপাল্টি করে পাশে আছেন তাঁর বাবা ও মা।
দীর্ঘ সময় ধরে একনাগাড়ে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে সহায় সম্বল যা ছিল তা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এরপর শুরু হওয়া ধারদেনার পথও এখন বন্ধ।
সালমানের চিকিৎসা বাবদ তার পরিবারের ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এখন আর তার বাবার কাছে চিকিৎসা করার মত অবশিষ্ট আর টাকা অবশিষ্ট নেই। তার পরিবার টাকার অভাবে এখন আর চিকিৎসা করতে পারছে না। সালমান ব্যথার যন্ত্রনায় সারারাত কান্নাকাটি করে, কাউকে ঘুমাতে দেয়না।
শিশু সালমানের বাবা-মায়ের মনে ভয়, অর্থের অভাবে ছেলের চিকিৎসা শেষ পর্যন্ত তাঁরা চালিয়ে যেতে পারবেন কি না। ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখতে অনেক অর্থের দরকার।
সালমান বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তাকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা বারডেম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। ১০ মাস আগে সালমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৭টি অপারেশন করা হয়। সেসব অপারেশন বাবদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।
সালমানের বাবা সজল মিয়া জানান, ছেলের ৬ মাস বয়স থেকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করে এখন আমি নিঃস্ব। আমার স্ত্রী ও আমি গার্মেন্টস এ চাকুরী করতাম। যা টাকা জমিয়ে ছিলাম তা চিকিৎসা বাবদ খরচ হয়ে গেল। আমার ছেলে সারারাত ধরে কান্নাকাটি করে আর বলে বাবা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও। তার দেখাশোনা করার জন্য কাজ কর্মও করতে পারিনা। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিনা।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন ধারাবাহিক চিকিৎসায় সালমান স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে। তবে দরিদ্র বাবার পক্ষে ছেলের চিকিৎসা ব্যয় চালিয়ে যাওয়া এখন আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। বিরল রোগে আক্রান্ত সালমানকে বাচাতে বৃত্তবানদের সহযোগীতা চেয়েছেন তার পরিবার। সবার সহযোগীতায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে এ শিশুটি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ