ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শরবত বিক্রেতার স্বপ্ন পূরণে আইজিপির সহধর্মিনী

প্রকাশনার সময়: ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৯:৩০

‘শরবত বিক্রির ফাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে রাজশাহী’র শরবত বিক্রেতা অদম্য, পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী সাদেকুল ইসলামের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক), সভানেত্রী ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এর সহধর্মিণী জীশান মীর্জা। তার মানবিক উদ্যোগে শিক্ষার্থী সাদেকুলকে ফুড পান্ডার খাবার সরবরাহের জন্য সাইকেল, হেলমেট ও মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছেন। সাদেকুল রাজশাহী গোদাগাড়ী থানার পশ্চিম বামনাইল গ্রামের জার্সিস আলীর ছেলে।

রোববার ( ১০ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় আরএমপি সদরদপ্তরে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি, আরএমপি কর্তৃক আয়োজিত সামাজিক কল্যাণমূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা। আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সাদেকুল সম্পর্কে জানা যায়, সে খুবই পরিশ্রমী ও মেধাবী শিক্ষার্থী। রাজশাহী শহরে থেকে সে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেন। হাফেজিয়া শেষ করার পর টিউশনির পাশাপাশি অন্যান্য কাজ করে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করে সাদেকুল। রাজশাহী নগরীর বালিয়াপুকুর এলাকায় বসবাস করার সময় নওগাঁর কয়েকজনকে ভ্যানগাড়িতে করে শরবতের ব্যবসা করতে দেখে তার এ পেশার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। তাদের কাছ থেকে শরবত বিক্রয়ের প্রাথমিক ধারণা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। গরমের সময় রাজশাহীতে শরবতের বেশ চাহিদা থাকলেও শীতের সময় চাহিদা না থাকায় সে আগাম ফুড পান্ডায় যোগ দেন তিনি।

সাদেকুল ১১ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। সে নগরের উপর ভদ্রা এলাকার মদিনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় লেখাপড়া শুরু করে ২০১৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল পাস করেন। বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে না পেরে সে বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করেন। ২০২০ সালে তিনি আলিম পাস করেন। এরপর এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে সে প্রায় পাঁচ বছর ধরে গরমের মৌসুমে রাজশাহী রেলস্টেশন এলাকায় ভ্রাম্যমান ভ্যান নিয়ে শরবত বিক্রি করেন। এতে যে আয় হয়, তা দিয়েই মূলত তার পড়াশোনার খরচ জোগাড় করার পাশাপাশি পিতা-মাতাকে সহায়তা করেন। বর্তমানে সে রাজশাহী সিটি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে (সম্মান) ভর্তি হয়েছেন। ভালো কিছুর করার আশায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

পুনাকের সাইকেল ও মোবাইল ফোন পেয়ে সাদেকুল ইসলাম অত্যন্ত খুশি। উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে সহায়তার হাত প্রসারিত করায় সাদেকুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর সভানেত্রী জীশান মীর্জা ও আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ