রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩২

আওয়ামী লীগ নেতার অপচেষ্টায় নন্দন পার্কে কমছে দর্শনার্থী

প্রকাশনার সময়: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:০৫

মালিকপক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদনের নন্দন পার্ক বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে দু-একটি দল ঘুরতে এলেও অন্য সময় দর্শনার্থী সংখ্যা যেন শূন্যের কোটায়। এতে বিপাকে পড়েছেন ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরের কিছু অংশে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ৮০ বিঘার জমিতে ২০০০ সালের শুরুতে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয় নন্দন পার্কের। এতে অংশীদার ছিলেন ১৪ জন। বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া মশিউর রহমান ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরে বোর্ড মিটিংয়ে ওই বছর সেলিম হোসেনকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বেলাল হক।

অভিযোগ উঠেছে, গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদের সহায়তায় পার্কের অংশীদার সেলিম মিয়া, সিরাজুল হক ও ফখরুল ইসলাম দেওয়ান চেয়ারম্যান বেলাল হক কে পার্কে ঢুকতে বাধা দেন। তারা প্রায় ১৮ মাস সেখানে যেতে পারেননি। তারা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ফের পার্কের দায়িত্ব নেন বেলাল হক।

এসব তথ্য জানালেও নাম প্রকাশে রাজি হননি কয়েকজন অংশীদার ও কর্মকর্তা। তারা বলেন, ২০০০ সালে নন্দন পার্কের কার্যক্রম শুরু হলেও বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সালে। তখন মালিকানা নিয়ে কোনো ঝামেলা ছিল না। তবে ব্যবসায়িকভাবেও খুব একটা সাফল্য আসেনি। বেলাল হক নেতৃত্বে এসে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান করার চেষ্টা করেন। গত আগস্টের পর অবৈধভাবে পার্কের দখল নেন সিরাজুল হক। এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হলে নন্দন পার্কে দর্শনার্থী আসা কমে যায়।

পার্কের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, চেয়ারম্যান বেলাল হক সহ কয়েকজন অংশীদার ২০২২ সালের শেষ দিকে নতুন করে নিজেদের টাকায় পার্কে নতুন রাইডস স্থাপন করেন। তাদের চেষ্টা ছিল দর্শনার্থী আকর্ষণের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সিরাজুল হক। তার সঙ্গে যোগ দেন আরও দুই অংশীদার।

অংশীদার ও কর্মীরা জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল হক পালিয়ে সাভার এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তিনি নন্দন পার্কের চেয়ারম্যান বেলাল হক সহ কয়েকজনের নামে ঢাকার একটি আদালতে সি আর মামলা করেন। ১৭ অক্টোবর বেলাল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত চার মাসে বেলাল হক সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া ও কালিয়াকৈর থানায় একাধিক মামলা করেন সিরাজুল হক।

নন্দন পার্কের চেয়ারম্যান বেলাল হকের অভিযোগ, সিরাজুল হক অতীতে আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ও কালিয়াকৈর থানার ওসির মাধ্যমে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে পার্কের ক্ষতি করেছেন। এখন সিরাজুল সহ কয়েকজন তাকে তাড়াতে প্রশাসনের সাহায্য নিয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার সহায়তায় অমানবিক আচরণ করছেন।

সিরাজুল হকের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা দিলেও তিনি উত্তর দেননি।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ