ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬

পটুয়াখালীতে বহিস্কৃত বিএনপি নেতার দাপটে কাটা ধান পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা

প্রকাশনার সময়: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:০৫

পটুয়াখালীতে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা দুলাল মাদবর ও ভূমিদস্যু মিলন গাজীর হাত থেকে নিজেদের জমির চাষাবাদের ধান পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নুর মোহাম্মদ রনি।

তিনি বলেন, সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিরাজলা গ্রামে বাবু খা ওয়াকফা এস্ট্রেটের ৪০ একর জমির মোতায়াল্লী ছিলো আমার বাবা শের আলী খাঁ। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর মোতায়াল্লী হই আমি এবং আমার বোন মিসেস ডলি আক্তার। দীর্ঘদিন আদালত চলার পর হাইকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দেন। পরে আমাদের মোট ওয়াকফাকৃত ১০ একর জমির প্রায় ৭৯ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করি। পরে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ওই জমির ধান কেটে আমাদের বাড়িতে এনে রাখা হয়। কিন্তু ওইদিন বিকেলে স্থানীয় ভূমিদস্যু মিলন গাজী, খবির হাওলাদার, রফিক তালুকদার, মিলন হাওলাদারসহ ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে এসে কেটে আনা ধান জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। তখন আমাদের জানমালের নিরাপত্তার কথা ভেবে পটুয়াখালী থানায় যোগাযোগ করি।

থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং আমাদের ধান স্থানীয় মতলেব দফাদারের বাড়িতে হেফাজতে রাখেন। একইদিন আমাদের ধান নেওয়ার জন্য মাড়াই মেশিন বাড়ির উদ্দেশ্যে আসার পথে দুলাল মাদবর ও তার লোকজন নিয়ে যায়। ৬ দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় দুলাল মাদবরের পিএস তসলিম এর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় মাড়াই মেশিন। এদিকে ২৯ ডিসেম্বর সকালে মিলন গাজী তার লোকজন নিয়ে আমাদের জমির ওপর দেয়া সাইনবোর্ড উঠিয়ে নিয়ে যান। পরে মীমাংসার জন্য জেলা আইনজীবী সমিতিতে দুই পক্ষের উকিল নিয়ে বসা হলে উভয়পক্ষের আইনজীবী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জমির সকল কাগজপত্র দেখে আমাদের (বাবু খা) ওয়াকফা এস্ট্রেটের পক্ষে রায় দেয়। এসময় আমাদের রোপণ করা ধান আইনজীবীরা আমাদের নিতে বলেন।

তবে আইনজীবীদের সেই সিদ্ধান্ত না মেনে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা দুলাল মাদবর ভূমিদস্যু মিলন গাজীদের পক্ষ নিয়ে ধান দু'পক্ষকে অর্ধেক করে নিতে বলে চলে যান। তা ছাড়া ভূমিদস্যু মিলন গাজী ও দুলাল মাতবর তাদের লোকজন দিয়ে আমাদেরকে ধান ও জমি অর্ধেক ভাগ করে নিতে বলে এবং বিভিন্ন সময় আমাদেরকে এলাকা ছাড়ার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, এই জমির জন্যই আমার বাবা দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে হামলা, মামলা সহ্য করে আসছিলো। কিন্তু আমরা যখন হাইকোর্ট থেকে রায় পাই তখন বাবা বেঁচে নেই। তা ছাড়া আইনজীবীদের সালিশির পরও আমাদের চাষাবাদের ধান পাচ্ছি না। বর্তমানে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। তাই আমরা যাতে আমাদের ধান পেতে পারি সেজন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা দুলার মাদবর বলেন, এনিয়ে আপনার সাথে কথা বলতে চাই না। আপনি যা পারেন তাই করেন।

পটুয়াখালী সদর থানার উপ-পরিদর্শক কমল জানান, দুপক্ষের উকিল নিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ধান দেয়ার কথা ছিলো কিন্তু বিবাদীরা তা মানছে না। তবে খুব তাড়াতাড়ি বিষয়টি নিয়ে বসা হবে এবং যারা ধান চাষাবাদ করেছে তাদের দেয়া হবে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ