ঢাকা, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অবৈধভাবে কৃষি জমির মাটি ইটভাটায়, ফসল-সড়কের ক্ষতি

প্রকাশনার সময়: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:১০

জামালপুরের মেলান্দহে দুই-তিন ফসলি জমির টপ সয়েল (জমির উপরিভাগের মাটি) কাটার ধুম পড়েছে। এতে কমছে জমির উর্বরতা, ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা ফসল উৎপাদন এবং সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ উঠেছে।

কৃষি জমি নষ্ট করে এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে মাটি খেকোরা। উপজেলা প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না থাকার কারণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন মাটি এসব মাটি ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, এ অঞ্চলের অধিকাংশ জমিই উর্বর পলি মাটি সমৃদ্ধ। বেশিরভাগ জমিই তিন ফসলী। এসব জমিতে ধান, পাট, সরিষা, সবজি ব্যাপকভাবে উৎপাদন হয়। কিন্তু কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এসব জমির টপ সয়েল কিনে নিচ্ছেন। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলান্দহ উপজেলার হাজরাবাড়ী পৌরসভার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় ফসলি জমির টপ সয়েল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। এ ছাড়া ফুলকোঁচা ইটের ভাটার পাশে থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি যাচ্ছে স্থানীয় লোকজনের বাড়ি উচুকরণ, গর্ত ভরাট ও স্থানীয় ইটের ভাটায়। মাহিন্দ্র গাড়িতে এসব মাটি পরিবহনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাটও। রাস্তায় ধুলো উড়ছে এতে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, টপ সয়েল জমির প্রাণ। জমির উপরের আট থেকে ১০ ইঞ্চিই হলো টপ সয়েল। আর সেখানেই জৈবশক্তি বিদ্যমান থাকে। এই টপ সয়েল জমি থেকে উত্তোলন করা হলে কৃষি ধ্বংসের মুখে পতিত হবে। যেভাবে মাটি বিক্রি হচ্ছে তাতে করে ফসল উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেতে পারে।

ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার একাধিক কৃষক জানান, আমরা মাটি বিক্রি করতে না চাইলেও বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে। জমির চারপাশের মাটি বিক্রি করলে তখন আমাদের আর করার কিছু থাকে না। মাটি কাটলে ফসলের ক্ষতি হবে জেনেও আমরা বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, সাধারণত এক কানি জমিতে প্রায় ৩৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়। কিন্তু টপ সয়েল কেটে নেওয়া জমিতে এর প্রায় দ্বিগুণ সার দিতে হবে। ফলনও স্বাভাবিকের চেয়ে কম হবে। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

মেলান্দহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনীম জাহান বলেন, বিষয় টা জানার পরে নায়েবকে পাঠিয়ে বন্ধ করে ছিলাম। ব্যস্ততার জন্য যেতে পারিনি। সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নিবো।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ