দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। হিমেল বাতাসের দাপটে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। হাড় কাঁপানো শীত ও হালকা কুয়াশার সঙ্গে হিমশীতল বাতাসে মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। এতে খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রমিকরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। চলতি মৌসুমে জেলায় এটিই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। কয়েকদিনের মধ্যেই মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শীতজনিত রোটা ভাইরাস ও আবহাওয়াজনিত কারণে আক্রান্ত হয়ে জেলার সদর হাসপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এতে চিকিৎসক ও নার্সদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত ১ সপ্তাহে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৩০০ এর অধিক ডায়রিয়া রোগী। এদের মধ্যে অধিকাংশই হলো শিশু ও বয়োবৃদ্ধ রোগী। এছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় ৪০০-৫০০ শতাধিকেরও অধিক রোগী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. রকিব সাদী।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তিরত শিশুর মা পলি খাতুন বলেন, গত চারদিন যাবৎ আমার আট মাসের ছেলে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। রোগীর এতো চাপ যে এখানে থাকতেই সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। কোনো বেড নেই, ঠান্ডায় মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তারপরেও ছেলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত থাকতে তো হবেই।
শীত এবং ঘন কুয়াশা থাকায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। আবহাওয়ার এই বৈরী অবস্থার ভেতরে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ঘরের বাইরে আসতে হচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে। হাটবাজারের শ্রমিক ও কৃষি শ্রমিকদের বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জেলার ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগীর ভিড়। শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা শীতে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যৈষ্ঠ পপর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ