ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আব্দুর রহমান ডিগ্রী কলেজ এডহক কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে আওয়ামী লীগ নেতার নাম নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি নিন্দা জানাচ্ছেন শিক্ষাথী, ছাত্র-জনতা, উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামির নেতাকর্মীরা।
কান্দিপাড়া আব্দুর রহমান ডিগ্রী কলেজের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে অব্যাহত রাখার স্বার্থে এডহক কমিটি ঘোষনা করেছে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়। গত ২৮ নভেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরে অনুমোদনক্রমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পত্র দিয়েছেন।
গত শুক্রবার রাতে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর অনুমোদিত কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে গফরগাঁও উপজেলায় তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই কমিটির সভাপতির রাজনৈতিক পরিচয় পাগলা থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু এবং বিদ্যোৎসাহী সদস্য রনি মিয়া ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক। কমিটিতে একজন সদস্য দাতা ও হিতৈষীদের মধ্যে সভাপতি মনোনয়ন দিবেন, শিক্ষকরা একজন প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। অধ্যক্ষ পদাধিকার বলে কমিটির সদস্য সচিব থাকবেন।
অনুমোদিত কমিটি নিয়ে কলেজ দাতা পরিবারের সদস্য, উস্থি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা কবির সরকার বলেন, বিএনপি নেতা আখতারুজ্জামান বাচ্চু তার প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার সাথে মিলে-মিশে এ কমিটি অনুমোদন করিয়ে এনেছেন। আখতারুজ্জামান বাচ্চু বিএনপির হাই কমান্ডে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গফরগাঁ ও পাগলা থানার অনেক বিএনপি নেতা-কমীর বহিস্কার করার সাথে জড়িত। আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁতকারি আখতারুজ্জামান বাচ্চু গফরগাঁও ও পাগলা থানার বিএনপিকে দূর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান টাকার বিনিময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের কাছে এই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম প্রস্তাব করেন। তিনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আগলে রেখেছেন।
কবির সরকার আরও বলেন, ফ্যাসিষ্টদের দোসরদের নিয়ে অনুমোদিত এই কমিটি ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেঈমানি। বিএনপি নেতা আখতারুজ্জামান বাচ্চুকে অবিলম্বে এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করে ক্ষমা চাইতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু বিএনপির দুর্দিনে মামলা, হামলার শিকার হয় নাই। অথচ আমরা আওয়ামী লীগের নির্যাতন সহ্য করে মামলা হামলার ভেতরে রাজনীতি করে টিকে রয়েছি। এখন বসন্তের কোকিলের মত ডাক দিচ্ছে, সেই ডাকে সাড়া দিচ্ছে স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্টের দোসর জয়বাংলার লোকজন।
আমরা কান্দিপাড়াবাসী আক্তারুজ্জামান বাচ্চু এবং রনি মিয়াকে এই কলেজর মাটি স্পর্শ করতে দিবনা। তারা সকলেই এই এলাকায় অবাঞ্ছিত।
পাগলা থানা ছাত্রদলের আহবায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, অবিলম্বে এই কমিটি প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
আব্দুর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল কাদির বলেন, এ কমিটি কিভাবে হয়েছে তা আমি জানানি। তা একমাত্র জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় বলতে পারবে। এর বেশি তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার মোবাইলে বলেন, আমরা কারও রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে অবগত না। এলাকাবাসী অভিযোগ করলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
নয়াশতাব্দী/ইএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ