ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাকশী বিভাগে পণ্যবাহী ট্রেনের আয় অর্ধেকে নেমেছে

প্রকাশনার সময়: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৪

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগের পণ্যবাহী ট্রেনের আয় অর্ধেকে নেমেছে। গত চার বছরের মধ্যে এ বছর আয় সবচেয়ে কম।

পাকশী বাণিজ্যিক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাকশী রেল বিভাগের অধীনে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৮৩টি মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। এতে আয় হয় প্রায় ৮০ কোটি টাকা।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৯৪টি মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। এতে আয় হয় ৫০ কোটি টাকা। ২০২১ সালে পণ্যবাহী ট্রেনে ১৮০ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার ৮৯৮ টাকা রাজস্ব আয় হয়। সে বছর এক লাখ ৪৭ হাজার ১৭৪টি ওয়াগনে মালামাল আনা হয়েছে। যার এসব মালামালের ওজন ৩৫৩ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার ৫০৮ কেজি।

এরপর ২০২২ সালে পণ্যবাহী ট্রেনে ১ লাখ ৯ হাজার ১৯২টি ওয়াগনে মালামাল আনা হয় ২৫৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৩ কেজি। এতে রাজস্ব আয় হয়েছিল ১২৮ কোটি ৭২ লাখ ৫৩ হাজার ১৮৫ টাকা।

পাকশী রেল বিভাগে ২০২১ সালে মালবাহী ট্রেনে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হয়। সে অর্থবছরে আয় ছিল ১৮০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অথচ তিন বছরের ব্যবধানে ২০২৪ সালে পণ্যবাহী ট্রেনের আয় নেমে মাত্র ৫০ কোটি টাকা হয়েছে।

জংশনের রেলইয়ার্ডে (মালগুদাম) পণ্যবাহী রেক থেকে পণ্য উঠানো-নামানোর সেই ব্যস্ততা নেই। ফাঁকা আর সুনসান নীরবতা। এই কাজের শ্রমিকরা (কুলি) অলস সময় পার করছেন। ট্রাকস্ট্যান্ড ফাঁকা। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ সড়কপথে পণ্য পরিবহনের কোনো যানবাহন নেই।

শ্রমিক আসাদুল আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করলেও কয়েকমাস ধরে বসে আছি। সঞ্চয় যা ছিলো শেষ হয়েছে। এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছি।

ঈশ্বরদী জংশনের সুপারিনটেন্ড মহিবুল ইসলাম জানান, জুলাই-আগস্ট থেকে ঈশ্বরদী জংশনে ভারত থেকে পণ্য আমদানি কমে গেছে। সেপ্টেম্বরে কিছু মালামাল এলেও অক্টোবরে মালামাল আসেনি। নভেম্বরে এ পর্যন্ত মাত্র দুই রেক মালামাল এসেছে।

আয় কমে যাওয়া প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০২৪ সালের শুরুতেই ডলারের দাম বাড়ার কারণে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি কমতে থাকে। এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভারতের সঙ্গে একমুখী বাণিজ্যের (শুধু আমদানি হয়, রপ্তানি নেই) কারণে ট্রেনে পণ্য আমদানি কমে গেছে। এরমধ্যে চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে আমদানি সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গিয়েছিল। এখন তো ভারতীয় পণ্য ট্রেনে আমদানি খুবই কম।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা একেএম নূরুল আলম বলেন, পণ্যবাহী ট্রেনে আয় কীভাবে বাড়ানো যায় এ বিষয়ে রেলওয়ে বাণিজ্য বিভাগ কাজ করেছে। ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সূফি নূর মোহাম্মদ বলেন, রেলপথে আমাদের দেশের সঙ্গে ভারতের মালবাহী ট্রেনে পণ্য পরিবহন দীর্ঘদিন ধরে চলমান। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ভারত থেকে বাংলাদেশে মালবাহী ট্রেন কম এসেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মালবাহী ট্রেনে পাকশী রেল বিভাগের আয় হয়েছিল প্রায় ৮০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছে ৫০ কোটি টাকা।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ