দীর্ঘদিন ধরে উর্ধ্বমুখী সবজির বাজারে নাভিশ্বাস ক্রেতাদের। ফলে চাহিদা থাকলেও কাচা পণ্য ক্রয় করতে সব ধরনের মানুষের চোখে মুখে ছিল হতাশার ছাপ। তাই বিকল্প চিন্তাধারায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে কৃষক বাজারব্যবস্থাপনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ বাজারে চাষিদের উৎপাদিত পণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ও খাজনা ব্যতীত সরাসরি ক্রেতাদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির জন্য চালু হয়েছে।
শনিবার ভোরে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসেনর ব্যবস্থাপনায় আমরা কালাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় প্রেসক্লাব সংলগ্ন ভলিবল খেলার মাঠে এ বাজারের সূচনা করা হয়। ভোর থেকেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হন এ বাজারে। বর্তমানে ক্রেতা বিক্রেতাদের হাকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে এ বাজারটি। উৎপাদিত কৃষি পণ্য সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি এবং নায্যমূল্যে কৃষি পণ্য কিনতে পেরে অনেকটা উচ্ছাসিত ক্রেতা ও বিক্রেতারা। ফলে এ বাজারটি ব্যবস্থাপন করায় আয়োজকদের স্বাদুবাদ জানিয়েছেন সবাই।
নায্যমূল্যের সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে বিভিন্ন বাজারেগুলোতে ১ পিস লাউ বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা, সেখানে নায্যমূল্যের বাজারে ১ পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। শুধু লাউই নয় বাজারে আসা অন্তত ২০ জাতের সবজি অন্যান্য বাজারের চেয়ে কেজি প্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছ। লাল শাক কেজি ৩০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা এবং মূলা ৪০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে শাকসহ।
দামে কম এবং সবজিগুলো সতেজ হওয়ায় ভোর থেকে ন্যায্যমূল্যের এ বাজারে ভিড় জমান ক্রেতারা।
নীলগঞ্জের কুমিরমারা গ্রাম থেকে আসা কৃষক সুলতান মিয়া জানান, নিজের উৎপাদিত কিছু সবজি খুব ভোরে এই বাজারে নিয়ে এসেছি। কোন মধ্যস্বত্বভোগী এবং খাজনা ছাড়াই পণ্যগুলো স্বল্প সময়ে বিক্রি করেছি। একটু কম দামে বিক্রি করেছি। তারপরও পাইকারী বিক্রির চেয়ে ভালো লাভোবান হয়েছি। যারা এই বাজারটি বসিয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। এই বাজারের ক্রেতা মকবুল মিয়া জানান, গতকাল এক আটি লাল শাক বাজার থেকে ৩০ টাকা কিনেছি। আজ দুই আটি ৩০ টাকায় কিনলাম। এছাড়া বড় বাজারের চেয়ে এই বাজারের সব সবজির দামই কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে পাচ্ছি। বাজারটা যাতে দীর্ঘদিন টিকে থাকে এজন্য আয়োজকদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। আর যারা ন্যায্যমূল্যের বাজারে আয়োজন করেছে তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমরা কলাপাড়াবাসী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সবজির বাজার। তাই আমরা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এখানে নিম্নবিত্তের স্বস্তির বাজার বসিয়েছি। আজ প্রথম দিনই শত শত ক্রেতা বিক্রেতাদের হাক ডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে এই বাজারটি। এখানে পণ্য বিক্রি করতে পেরে এবং ক্রয় করতে পেরে অনেকেই আনন্দ প্রকাশ করেছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, মধ্যস্বত্বভোগী ও খাজনা না থাকায় কম দামে সবজি বিক্রি করতে পারছে বিক্রেতারা। ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের স্বস্তি দিতেই এ বাজার বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, মূলত সিন্ডেকেট থেকে বেড় হতেই আমাদের এ আয়োজন। এ বাজার রক্ষার দায়িত্ব সবার।নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ