৫ লাখ টাকাসহ প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা দিবে সরকার। সেই সাথে একটি চাকরি দেয়ার কথা বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বামীকে নিহত দেখিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের নামে হত্যা মামলার বাদী কুলসুম আক্তার ও মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ২ প্রতারককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে তাদেরকে পুলিশ হেফাজতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কুলসুম আক্তার সহ মামলার মূল পরিকল্পনাকারী শফিউদ্দিনকে কক্সবাজার ও রুহুল আমীনকে ঢাকা থেকে আশুলিয়া থানা পুলিশ হেফাজতে নেন।
পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বামী আলামিনকে মৃত দেখিয়ে আদালতে মামলা করেন কুলসুম। পরবর্তীতে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারেন আলামিন জীবিত আছে। পড়ে বিষয়টি নিয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সিলেট থেকে আলামিনকে উদ্ধার করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে মামলার বাদী মানিকগঞ্জ জেলা ঘিওর থানা সিংজুরী গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে কুলসুম আক্তার (২১), মানিকগঞ্জ জেলা ঘিওর থানা কুলহারা গ্রামের মৃত মাসুমের ছেলে মো. রুহুল আমীন (৬৪) এবং মানিকগঞ্জের শিবালয় থানা টেপরা এলাকার মৃত মনসের আলীর ছেলে মো. শফিউদ্দিন (৪০) কে বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়।
হত্যা মামলার বাদী কুলসুম আক্তার বলেন, গাড়িতে পরিচয় হয় শফিউদ্দিনের সাথে। শফিউদ্দিন বলেছে সে আমাকে চাকরি দিবে। পড়ে আমাকে রুহুল আমীনের কাছে নিয়ে যায়। রুহুল প্রলোভন দেখিয়ে এবং ব্লাকমেইল করে আমাকে দিয়ে ভুয়া মামলা করিয়েছে। যে মারা গেছে সে আমার কেউ না। তাকে আমি চিনিও না। আমাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমার জন্মনিবন্ধন কার্ড, চেয়ারম্যান সনদপত্র নিয়ে হঠাৎ করে উকিলের সামনে নিয়ে যায় এবং ছবি তোলে। মামলার বিষয় কিছু বুঝি না। রুহুল আমীন বলেছে, সরকার থেকে ৫ লাখ টাকা পাবো আর প্রতিমাসে ভাতা পাবো।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট আমার স্বামীর সাথে আমি সিলেট ছিলাম, তিনি মরেনি। এটা ভুয়া মামলা। যখন আমার স্বামী মামলার খবর শুনে আশুলিয়া থানায় আসে তখন রুহুল আমীন আর শহীদ আমাকে মেরে গুম করার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাকে কক্সবাজার নিয়ে যায়। আমার স্বামী এখনো জীবিত। এই মামলায় কে বা কারা আসামি আমি কিছুই জানি না।
কুলসুম আরো বলেন, আমাকে ও পরিবারকেও তারা হুমকি দিয়েছে। বলেছে মামলার কথা কাউকে বললে আমার ফাঁসি হবে।
আশুলিয়ায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, যেহেতু মামলার বাদী কুলসুম তার স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছন। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি তার স্বামী জীবিত আছে। পরে তার স্বামীকে সিলেট থেকে উদ্ধার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি করানো হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কুলসুম সহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় আনা হয়েছে। কুলসুমকে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার জন্য পাঠানো হয়।
উল্লেখ, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বামীকে মৃত দেখিয়ে গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার আদালতে শেখ হাসিনা সহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন কুলসুম আক্তার। মামলাটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় নথিভুক্ত হয়।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ