গাজীপুরের শ্রীপুরে পরকীয়ার জেরে আশরাফুল ইসলামকে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আজিজ মিয়া (৩৪) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
সোমবার (৫ নভেম্বর) রাতে ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাঁঠাল এলাকা তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর জুন্নুরাইন বিন আলম এ তথ্য জানান।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, আট বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক স্ত্রী তসলিমা আক্তার (৩০) কে বিয়ে করেন আজিজ মিয়া। এরপরে শ্রীপুরের চন্নাপাড়া এলাকায় একসাথে বসবাস করেন তারা। রাজমিস্ত্রী ঠিকাদার হিসাবে কাজ করেন তিনি। তসলিমা নিহত আশরাফুল ইসলামের (২৫) নিজস্ব গার্মেন্টস এস.এস ফ্যাশনে চাকরি করার সুবাদে তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।
ঘটনার দিন আজিজ কাজের জন্য বের হওয়ার পর কিছু কাজের যন্ত্রপাতি ফেলে আসায় তা আনতে বাড়িতে গেলে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে তসলিমার কথোপকথন শুনতে পায়। পরে বাসার পাশে নবনির্মিত বাথরুমে লুকিয়ে আশরাফুল ইসলামের জন্য অপেক্ষায় থাকে।
এক পর্যায়ে আশরাফুল তসলিমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য দেখা করতে আসে এবং ঘরের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় ও টিভির ভলিউম বাড়িয়ে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। আজিজ ঘরের বাহির থেকে দরজা খুলার জন্য জোরে জোরে কড়া নেড়ে চিৎকার- চেচামেচি শুরু করলে এক পর্যায়ে স্ত্রী তসলিমা আক্তার ঘরের ভিতর থেকে দরজা খুলে দেয়।
পরবর্তীতে এক ঘরে তাদের দুজনকে দেখতে পেয়ে প্রচণ্ড রাগান্বিত হয়ে ঘরের ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে দেয় এবং তাহাদের পরকীয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তা স্বীকার করে এবং গত সপ্তাহের শুক্রবারে ফ্যাক্টরি ছুটি থাকায় পরিকল্পনা অনুযায়ী আশরাফুলের ফ্যাক্টরির ভেতর তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক হয় বলে জানায়।
এ কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে একই ঘরে ডাইনিং টেবিলের নিচে থাকা ধারালো বটি দা দিয়ে আশরাফুলকে নৃশংসভাবে মাথা ও পিঠে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে এবং তসলিমার গলা ও গালে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে ঘরের বাহির থেকে তালা দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আত্মগোপন চলে যান।
পরে এঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুর এবং র্যাব-১৪, সিপিএসসি, ময়মনসিংহ যৌথ অভিযানে সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাঁঠাল এলাকা তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান আসামি আজিজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আসামিকে শ্রীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ