একটি শিশুকে কোলে নিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন স্কুল শিক্ষক। এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ঘটনা রোববার সকাল সাড়ে ১০টার। ঘটনাস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়। ওই শিক্ষকের নাম পঙ্কজ মধু (৪৫)। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া উপজেলার বেদকাচিয়া গ্রামের লিও মধুর ছেলে। তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দাতিয়ারা পৌর এলাকায় বসবাস করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক ছাত্রীর মেয়ে শিশুকে কোলে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করিয়েছেন পঙ্কজ মধু (৪৫) নামের একজন শিক্ষক। এ ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকেই প্রসংশায় ভাসছেন ওই শিক্ষক।
পঙ্কজ মধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক।
ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষক পঙ্কজ মধুর কোলে শিশুটি আসলে তারই এক ছাত্রীর। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর (১৫) বিয়ে হয়েছে করোনার ছুটির মধ্যে। বিয়ের ঠিক এক বছরের মাথায় তার কোল জুড়ে আসে একটি কন্যাসন্তান। বিয়ের পর পড়াশোনা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে স্কুল খোলে। তখন শিক্ষক পঙ্কজ মধু জানতে পারেন দশম শ্রেণির এক ছাত্রী স্কুলে আসছে না। পরে তিনি ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসার জন্য খবর দেন ।
রোববার সকালে ছাত্রী তার তিন মাস বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু কোলে সন্তান থাকায় ক্লাসের পাঠে মনোযোগ দিতে পারছিলো না সে। এ সময় শিক্ষক পঙ্কজ মধু ছাত্রীর মেয়েকে কোলে নিয়ে পাঠদান করান। তখন কেউ একজন ছবিটি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট দেন। সঙ্গে সঙ্গে ছবিটি ভাইরাল হয়।
শিক্ষক পঙ্কজ মধু বলেন, ছবিটি যে ফেসবুকে ছড়িয়ে গেছে তা আমার জানা নেই। আর ভাইরাল হওয়ার জন্যও আমি এই কাজটা করিনি।
তিনি আরো বলেন, ২১ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। আমি একজন শিক্ষক হিসেবেই বাঁচতে চাই। শিক্ষার্থীর সুবিধার কথা চিন্তা করে আমি তার মেয়েকে কোলে নিয়ে ক্লাশ করাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, পঙ্কজ মধু একজন ভালো শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সে খুব আন্তরিক। শ্রেণিকক্ষে তিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ