দশমিনায় জমি লিখে না দেয়ায় ছেলে ও পুত্রবধূর যোগসাজশে বৃদ্ধকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
আজ রবিবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ আদমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বৃদ্ধের নাম নুর ইসলাম হাওলাদার (৭০)। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা। অভিযুক্ত সোহাগ বহরমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
স্থানীয়রা জানান, নুর ইসলামের বড় ছেলে মো. শাহজাহান ও পুত্রবধূ রুনু বেগম বড়ি কারার জন্য জমি লিখে দিতে চাপ দেন তাকে। দাবি আদায়ে ইউপি সদস্যকে ধরেন তারা। রোববার সকালে বৃদ্ধ দক্ষিণ আদমপুর বাজারে চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় ইউপি সদস্য তাকে দোকান থেকে টেনে-হিঁচড়ে খালের পাড়ে নিয়ে যান। ছেলে ও পুত্রবধূকে জমি লিখে দিতে বলেন, বৃদ্ধ রাজি না হওয়ায় সোহাগ তাকে লাথি মারেন।
এ সময় ইউপি সদস্যসহ তার সঙ্গে থাকা রিপন, রহিম, শাহজাহান মৃধা, কাইয়ুম ও মঞ্জু পানিতে চুবিয়ে ধরেন। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এলে তারা পালিয়ে যান। তাকে কাঁদা থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী দক্ষিণ আদমপুর গ্রামের আবুল কালাম বলেন, সকালে নূর হোসেনকে চায়ের দোকান থেকে সোহাগ টানতে টানতে দক্ষিণ পাশে খাল পাড়ে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছিল রিপন, রহিম, শাহজাহান, রহিম ও মঞ্জু। নূর ইাসলামকে খাল পাড়ে নিয়ে বড় ছেলেকে জমি না দেয়ার কারণে রিপন মারধর করে খালের পানিতে ফেলে দেয়। পরে সবাই কাঁদার মধ্যে চেপে ধরে। স্থানীয়রা এলে তারা চলে যায়। নূর ইসলামকে কাঁদা মাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করার সময় তখনই মানে হয়েছে সে মারা গেছে। এরপর দশমিনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত চিকিৎসক রাহুল বিন হালিম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই বৃদ্ধ মারা যান। দশমিনা থানা-পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
নূর ইসলামের মেয়ে কহিনুর বলেন, ‘আমার বড় ভাই ও তার স্ত্রী দীর্ঘ দিন ধরে বাবাকে জমি লিখে দিতে বলে। তারা যে জমি চায় বাবা তা দিতে রাজি নন। বাবা বলেন, ওই জমি বিক্রি করে আমার দায়-দেনা দেব। আমার বড় ভাই ও ভাবি মানতে চান না। এ নিয়ে বহুবার পারিবারিকভাবে বসেছি। আজ সকালে আমার বড় ভাই ও ভাবি স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সোহাগ, ভাবির ভাই রিপন ও স্থানীয় রহিম, কাইয়ূম ও মঞ্জুকে দিয়ে আমার বাবাকে চায়ের দোকান থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে পানিতে চুবাইয়া মেরে ফেলে। আমার বাবার হত্যাকারীর বিচার চাই।’
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ আবদুল আলীম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। জড়িতদের ধরতে চেষ্টা চলছে।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ