ফরিদপুরের সালথায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সবজি বাজার। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সবজি বাজারের আগুনের তাপ এখন উপজেলার হাজারো কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর ও ভ্যানচালকের পরিবারের পাশাপাশি চাকরীজীবী এবং মধ্যবিত্ত পরিবারেও লেগেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সব শ্রেণির মানুষই যেন অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
জানা গেছে, এখানকার সবজির হাট-বাজারগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি শাক-সবজি আবাদ করা হলেও দাম কমছেই না। আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে সরেজমিন দুটি কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজি বিক্রেতারা প্রতি কেজি মরিচ ৪৫০, বেগুন ১২০, ঢেঁরশ ১২০, করল্লা ১২০, পটল ১০০, মুলা ১০০, ফুলকপি ১০০, পাতাকপি ৮০, শসা ৮০, মুখিকচু ৮০, পেপে ৬০, ধুন্দল ৬০, ঝিংগা ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৭০ ও আলু ৬০ টাকা বিক্রি করছেন। এছাড়া প্রতি আঁটি লাল শাক ৩০, ডাটা ৪০ ও প্রতিহালি কাঁচা কলা ৫০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।
মাত্র এক থেকে দেড় মাসের ব্যবধানে সবজির দাম ডাবল হয়েছে। অভিযোগ আছে, সবজিচাষিদের কাছ থেকে স্বাভাবিক দামে পাইকারী সবজি ক্রয় করে সবজি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো ক্রেতাদের কাছ থেকে খুচরা দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন। তবে একাধিক সবজি বিক্রেতার দাবি, বন্যায় দেশে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই সবজি সংকটের সৃষ্টি হওয়ায় হু হু করে দাম বাড়ছে। এখানে তাদের কিছু করার নেই। তারা বলেন, বাজারে কোনো সিন্ডিকেট নেই। বেশি দামে সবজি ক্রয় করে, বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় আমরা নিজেরাও সবজি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি।
সবজি কিনতে আসা দিনমজুর হাফেজ মোল্যা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকার বেশির ভাগ মানুষ গরিব। এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি মানুষ কৃষিকাজ ও ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়। একজন দিনমজুর ও একজন ভ্যানচালক প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০০-৫০০ টাকা উপার্জন করে। আর যদি বৃষ্টি-বাদল থাকলে ঘরে বসে থেকে দেনা হয়ে সংসার চালাতে হয়। আবার অনেককে না খেয়েও থাকতে হয়। বর্তমানে তো বৃষ্টি নামছে পুরোদমে। এখন বেশির ভাগ গরিবরা বেকার।
এমন অবস্থায় বাজারে যদি অস্বাভাবিকভাবে চাল-ডাল ও সবজির দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমরা কীভাবে বাঁচব। তিনি আরও বলেন, সব সরকারই গরিবের পক্ষের সরকার বলে দাবি করে। আমরা তো কাজে-কর্মে দেখি কোনো সরকারই গরিবের কথা ভাবে না। গরিবরা কীভাবে চলছে, তা নিয়ে চিন্তাও করে না। যাইহোক- বর্তমান সরকারকে বলব, সবজি বাজারে নজর দিন। আমরা গরিবরা সবজি বাজারে ঢুকতে পারছি না। সবজি ছাড়াই ভাত খেতে হচ্ছে আমাদের।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, আমরা সবজি বাজার মনিটরিং করছি। সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই এক দিনের মধ্যে অভিযান চালানো হবে।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ