ঢাকা, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

নেত্রকোনায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ২২ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেত

প্রকাশনার সময়: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:০৬

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নেত্রকোনার দূর্গাপুর, পূর্বধলা, কলমাকান্দা, সদর উপজেলা। কৃষিনির্ভর এই জেলায় অসময়ের বন্যায় পানির নিচে পড়েছে ২২ হাজার ৬ শত ৪১ হেক্টর আমন ধানের জমি। যার আনুমানিক মূল্য ২ শত ৯৩ কোটি টাকা।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এবারের আকস্মিক বন্যায় ভেঙে যায় নেত্রকোনার পূর্বধলাসহ বিভিন্ন এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ফলে গত পাঁচদিন ধরে জেলার দুর্গাপুর, পুর্বধলা, কলমাকান্দা ও সদরের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। তলিয়ে যায় বিস্তর ফসলি জমি। তবে গত দুদিন ধরে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্ত বাড়িঘরে থাকা পানি সরতে হয়তো আরও দেড় দুই সপ্তাহ লাগতে পারে বলে জানান ভুক্তভোগী জেলে মো. জাহাঙ্গীর।

এদিকে, এ নিয়ে তিন দফায় আমন আবাদ করেও অবশেষে শেষ রক্ষা হয়নি কৃষক সোনামিয়ার। অনেক কৃষকের ধানের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও এবার একেবারেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

বাট্টাপাড়া গ্রামের কৃষক হাদিস মিয়া জানান, তারা ৫ ভাই প্রায় মিলে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার খরচ করে ২ শ কাঠা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার সব তলিয়ে একবারে নিঃস্ব হয়ে গেলেন।

দূর্গাপুর ও কলমাকান্দা সীমান্তবর্তী হওয়ায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে আমন ধানের চাষ বেশি হয় এবং বেশিরভাগ পাহাড়ি অঞ্চলের জমি এক ফসলি যেটাতে শুধু আমন ধানেই চাষ করা হয়। হঠাৎ বন্যায় আমনের জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা পড়েছে দুশ্চিন্তায়। এই জমিগুলোতে নতুন করে চাষের কোনো আশা নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নরুজ্জামান জানান, জেলায় এ বছর রোপা আমনের আবাদ হয়েছিলো ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৯শ হেক্টর। তারমধ্যে বন্যায় গেল ৫দিনে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাপ্ততথ্যে মোট ২২ হাজার ৬৪১ হেক্টর ধান ও ১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর সবজি নষ্ট হয়েছে। জেলার মোট ৫ লক্ষাধিক কৃষকের মাঝে ৬৯ হাজার ৪৫০ জন কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আনুমানিক ২ শত ৯৩ কোটি টাকা মূল্যের ধান নষ্ট হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই আমন আবাদের সময় শেষ। যে কারণে আবার আবাদ করার সুযোগ নেই। ইরি বোরো মওসুম চলে আসায় হয়তো পরবতী প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে তাদের ক্ষতি পোষাতে প্রনোদণা দেয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য নেত্রকোনার দূর্গাপুর, পূর্বধলা, কলমাকান্দা উপজেলার পানি কমলেও বাড়ছে সদর উপজেলার কিছু অংশের পানি, আবার গত দুইদিনে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বারহাট্রা উপজেলার ঠাকরাকোনা, সাহতা, আসমা ও চিরাং এ চারটি ইউনিয়ন।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ