ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এবার পাহাড় ঘিরে ‘ষড়যন্ত্র’

প্রকাশনার সময়: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪

খাগড়াছড়িতে মোটর সাইকেল চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে স্থানীয় এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় ফের অশান্ত তিন পার্বত্য জেলা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে সদরসহ পুরো জেলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে ঘটনাটি ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে স্থানীয়রা। এদিকে পাহাড়ের সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং পার্বত্য তিন জেলার সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ দাঙ্গায়’ রূপ নিতে পারে আশঙ্কা করে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে সেনাবাহিনী। খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতায় অন্তত চারজনের মৃত্যুর পর খাগড়াছড়ি পৌর শহর ও জেলা সদর এবং রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার মধ্যে গতকাল শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

সংঘাত-সংঘর্ষে খাগড়াছড়িতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে তিনজন পাহাড়ি যুবক আর আহত হয়েছে ৯ জন। এছাড়া রাঙামাটিতে আহত হয়েছে ২০ জন। খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল শুক্রবার দুপুর দুইটা থেকে আজ শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে রাঙামাটি পৌর এলাকায় পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়িতে নিহতরা হলেন— জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল (৩০), আর আহতরা হলেন, জ্যোতিশ্বর ত্রিপুরা, সোহেল চাকমা, নলেজ চাকমা, বিজয় চাকমা, আনন্দ চাকমা, সুজন চাকমা, পহেল দেওয়ান ও মানব ত্রিপুরা। এদের সবার বয়স ত্রিশের মধ্যে রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি শান্ত করতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে প্রত্যেককে সংযতভাবে চলার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তবে বর্তমানে জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক। মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান শুক্রবার সকালে বলেন, ‘রাতে গোলাগুলি হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনজনের লাশ পাওয়া গেছে। মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। আহত হয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থল দীঘিনালায় যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করব। একটা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’ মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান আরো বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, আগুনে দীঘিনালা বাসস্টেশন ও লারমা স্কয়ার এলাকায় ১০২টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের ৭৮টি ও বাঙালির সম্প্রদায়ের ২৪টি দোকান রয়েছে। ভাঙচুর হয় চারটি দোকান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মিলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন। প্রশাসন নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

শান্তি বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর ‘বিশেষ অনুরোধ’: বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার সূত্রপাত এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাহাড়ি সংগঠনের নেতাকর্মীদের গোলাগুলির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এসব বর্ণনা তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তির শেষ অনুচ্ছেদে লেখা হয়, ‘উপরোক্ত ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে চলমান উত্তেজনা তিন পার্বত্য জেলায় ‘ভয়াবহ দাঙ্গায়’ রূপ নিতে পারে। অনতিবিলম্বে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’

যথাযথ তদন্ত কার্যক্রম সম্পাদনের মাধ্যমে ‘প্রকৃত দোষীদের’ শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে এতে বলা হয়, ‘তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’

আইএসপিআরের বর্ণনায় সংঘাতের শুরু: ‘তিন পার্বত্য জেলাসমূহে উচ্ছৃঙ্খল জনসাধারণের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ প্রসঙ্গে’ শিরোনামে সংঘাতের সূত্রপাত বিষয়ে বলা হয়, গত বুধবার খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোটর সাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল জনতার’ পিটুনিতে মো. মামুন নামে এক যুবক নিহত হয়। সদর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ ঘটনা কেন্দ্র করে পরদিন বিকালে দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

মিছিলটি দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় ইউপিডিএফ (মূল)-এর কতিপয় ‘সন্ত্রাসী’ মিছিলের ওপর হামলা করে ও ২০-৩০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপর ‘বিক্ষুব্ধ জনতা’ বোয়ালখালী বাজারের কয়েকটি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে বলে আইএসপিআরের ভাষ্য।

সংঘর্ষ চলাকালে দুই পক্ষের ৬ জন আহত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানিয়ে আইএসপিআর বলেছে, ‘পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ফায়ার ব্রিগেড ও স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় আগুন নেভায়।’

বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে বাঙালি-পাহাড়িদের মধ্যে সংঘাতের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন পাহাড়ির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। আইএসপিআর বলছে, বুধবার উচ্ছৃঙ্খল জনতার পিটুনিতে মো. মামুন নামে একজনের মৃত্যুতে এর সূচনা। বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে বাঙালি-পাহাড়িদের মধ্যে সংঘাতের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন পাহাড়ির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। আইএসপিআর বলছে বুধবার উচ্ছৃঙ্খল জনতার পিটুনিতে মো. মামুন নামে একজনের মৃত্যুতে এর সূচনা।

এসব ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকাগুলোয় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, ‘সেই সঙ্গে কতিপয় ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে ক্রমেই পরিস্থিতিকে আরো উত্তেজনাকর করে তোলে।’

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডিসির সভাপতিত্বে জরুরি ভার্চুয়াল সভায় বসার কথা জানিয়ে আইএসপিআর লিখেছে, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা ও পানছড়িসহ সব উপজেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর যৌথ টহল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন কমিউনিটি লিডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সব পক্ষকে সহিংস কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার পরামর্শ দিতে বলা হয়।

রাতের গোলাগুলির বর্ণনা: বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি শহরে গুলির যে ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, সেটি নিয়েও বক্তব্য তুলে ধরা হয় আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে। এতে লেখা হয়, একটি টহল দল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুমূর্ষু এক রোগীকে স্থানান্তরের সময় খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর এলাকায় পৌঁছালে ‘উত্তেজিত জনসাধারণ’ ইউপিডিএফ (মূল)-এর নেতৃত্বে বাধা সৃষ্টি করে। এক সময় ইউপিডিএফ (মূল)-এর ‘সন্ত্রাসীরা’ সেনাবাহিনীর টহল দলের সদস্যদের ওপর গুলি করে এবং আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। এ গোলাগুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং কয়েকজন আহত হওয়ার কথাও তুলে ধরা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এতে আরো লেখা হয়, ‘একই ঘটনার ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে স্থানীয় ‘উচ্ছৃঙ্খল জনসাধারণ’ কয়েকজন যুবকের মোটর সাইকেল থামিয়ে তাদের ওপর হামলা ও লাঠিপেটা করে। সেই সঙ্গে উত্তেজিত জনসাধারণ ইউপিডিএফ (মূল)-এর নেতৃত্বে ফায়ার ব্রিগেডের অফিসে ভাঙচুর করে।’

রাঙামাটিতে সংঘাত: খাগড়াছড়ির সংঘাতের জেরে শুক্রবার রাঙামাটিতেও সহিংসতার বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরে আইএসপিআর। বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-পিসিজেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে রাঙামাটি জিমনেশিয়াম এলাকায় সমবেত হয়। সেখানে ৮০০ থেকে এক হাজার ‘উত্তেজিত জনসাধারণ’ একটি মিছিল বের করে জানিয়ে আইএসপিআর লিখেছে, ‘(মিছিলটি) বনরুপা এলাকার দিকে অগ্রসর হয় এবং বনরুপা বাজার মসজিদ, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সিএনজি-অটোরিকশা, মোটর সাইকেল এবং বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে করে উভয় পক্ষের বেশ কিছু লোকজন আহত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’

নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ অন্তর্বর্তী সরকারের : পাহাড়ের সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং পার্বত্য তিন জেলার সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সমস্যা নিরসনে সরকার ‘আন্তরিকভাবে কাজ করে’ যাচ্ছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পরিদর্শনে যাবে বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক বার্তায় রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাসরত সব নাগরিককে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধীদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা হবে।’

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি: খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে রাঙামাটি জেলায়ও। খাগড়াছড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে গতকার শুক্রবার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট ও বাড়িঘরে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ির সদর উপজেলায় বেলা ২টা থেকে ১৪৪ ধারা জারির নোটিশ জারি করা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত আদেশে আজ রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকার কথা বলা হয়েছে।

একইভাবে শুক্রবার সকাল থেকে রাঙামাটিতে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনার পর পৌর এলাকায় বেলা একটা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।

শাহবাগে বিক্ষোভ, পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা: খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড়িদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র জনতা’ ব্যানারে রাজধানীর শাহবাগ মোড় আধা ঘণ্টা অবরোধ করা হয়েছে। পরে আগামী তিন দিন পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা সরে যান।

গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র জনতা’ ব্যানারে শতাধিক মানুষ শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। পরে সাড়ে ১২টার দিকে তারা সেখান থেকে সরে যান। বিক্ষুব্ধ জুম্ম জনতা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের শুভাশীষ চাকমা বলেন, হামলার প্রতিবাদে আগামী তিন দিন অর্থাৎ, ৭২ ঘণ্টা পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ডাক দেয়া হয়েছে। অন্যান্য কর্মসূচি দেয়া হলে সেটিও আমরা জানিয়ে দেব বলে জানান তিনি। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা সমাবেশ করেন। এ সময় তারা ‘পাহাড়িদের বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির’ দাবি জানান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তারা বিক্ষোভ করে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ের দিকে যান। প্রায় ২০ মিনিট তারা শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেখান থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ