দীর্ঘ ১৩ বছর পর চাকরি ফিরে পেলেন আব্দুর রাজ্জাক হিরু। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এসময় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আব্দুর রাজ্জাক আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন ২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল মামলার আসামি হয়ে সাময়িক বরখাস্ত হন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৮ নভেম্বরে মন্তাজ আলীর মেয়ে রুমি বেগমের সঙ্গে মুসলিম পরিচয় দিয়ে প্রেম করতেন জলধর বর্মণ। রাতে রুমি বেগমের সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপ করতে এসে মন্তাজ আলীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। পরের দিন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মন্তাজ গলা কেটে খুন করেন জলধরকে। এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জলধরের বাবা শ্রী প্রেমানন্দ।
এ মামলায় ২০২৪ সালের ৯ জুন ১৪ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। রায়ে ১ নম্বর আসামি মন্তাজ আলীর যাবজ্জীবন ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলায় ওই এলাকার কয়েকজন শিক্ষক, ইউপি সদস্যকে আসামি করা হয়েছিল। যার মধ্যে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকও ছিলেন। ৮৮ দিন জেলে থাকায় তিনি ২০১২ সালে সামরিক বরখাস্ত হন। মামলা থেকে খালাস পাওয়ায় পর ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি পুনরায় আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে বহাল হন।
এ বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাকে মিথ্যাভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়। ৬ নম্বর আসামি করা হয়। যার কারণে আমি ৮৮ দিন জেলে ছিলাস, ও ১৩ বছর নানা হয়রানির শিকার হই। জেলা থাকার কারণে সামরিক বরখাস্ত হই। এই ১৩ বছর চাকরি না থাকায় আমি কষ্টের মধ্য দিয়ে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও পরিবার চালাই। আশা করি পুনরায় চাকরি বহাল হওয়ায় ১৩ বছরের বেতন-ভাতা সব পাবো।
এ বিষয়ে আদিতমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম আজিজুল হক বলেন, হত্যা মামলার আসামি থাকায় ২০১২ সালে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন আব্দুর রাজ্জাক। এখন তার নামে আনিত অভিযোগ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় পুনরায় তার পদে বহাল করা হয়েছে। যোগদান করার পর তার ১৩ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ