ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ত্রিশালে দেওয়ানবাগ শরিফে হামলার চেষ্টা, ভাঙচুর 

প্রকাশনার সময়: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১৭

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গোপালপুরে বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরিফে ৫ শতাধিক ভিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়েছে। এ সময় প্রতিরোধের মুখে পড়ে আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক।

আজ রোববার সকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন একত্রিত হয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। তারা দেওয়ানভাগ শরিফের প্রধান ফটক ও সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ভিতরে ডুকার চেষ্টা চালালে ভিতরে থাকা হাজারো ভক্ত অনুরাগী ভিতরে থেকে মরিচের গুঁড়া স্প্রে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলাই দিয়ে মার্বেল নিক্ষেপ ও গরম পানি ছোড়ে। বাইর থেকেও বিক্ষুব্ধ জনতা ভিতরে থাকা লোকজনের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা উত্তেজিত হয়ে মূল ফটকের বাইরে থাকা তাদের কন্ট্রোল রুমে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জানা যায়, দেওয়ানবাগ শরিফে বিতর্কিত ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড হতো বলে জানিয়ে তা গুঁড়িয়ে দিতে দুই দিন আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকাভিত্তিক ব্যাপক প্রচার করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ এ হামলার চেষ্টা হলো।

জানতে পেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তারা।

স্থানীয় রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এলাকাবাসী ভন্ড পীর দেওয়ানবাগীর ওপর অনেক আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। আজকে সকালে এলাকার জনগণ একত্র হয়ে এ দরবার উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করব। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছি।

দেওয়ানবাগ শরিফের মিডিয়া সেলের কো-অর্ডিনেটর ড. সৈয়দ মেহেদী হাসান আজকের হামলায় তাদের ১২০ জন আহত হয়েছেন জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দরবার পরিচালনা করে আসছি। আমাদের দেওয়ানবাগী হুজুরের মূল শিক্ষায় হলো মানবতার শিক্ষা। আমরা কাউকে আঘাত করিনি। এভাবে চলতে থাকলে তো টিকা যাবে না। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আমরা আগে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানাব, তারপর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, দেওয়ানবাগ শরিফে হামলা হতে পারে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী হামলা চালাতে চাইলে আমরা তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ