ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দুই পা নেই, তবুও বেঁচে থাকার চেষ্টা!

প্রকাশনার সময়: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৪৯

শওকত জীবন সংসারে এক সংগ্রামী পুরুষের নাম। দুই পা অকেজো হয়েও জীবন সংগ্রামে বসে নেই গাজীপুর কালিয়াকৈরের মোঃ শওকত হোসেন (৪২)। সে উপজেলার ভানের টেকি গ্রামের মোঃ শাহজাহান মিয়ার ছেলে। প্রতিনিয়ত তিনি প্রতিকূল পরিবেশে যুদ্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী শওকত (৪২) এক সময় অন্য দশজনের মত সুস্থ-সবল ছিলেন। একজন গাড়ি চালক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। কিন্তু ২০০১ সালে তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। জীবনের গতিপথ যায় পাল্টে।

হঠাৎ করেই ২০০১ সালে ২২ বছর বয়সে বৈদ্যুতিক শকে তার দুটি পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব জীবন বরণ করতে হয়। তারপর থেকে হাঁটাচলা ও কাজকর্মের কথা কখনো চিন্তা করতে পারেননি শওকত হোসেন। এখন হুইল চেয়ারই তার একমাত্র ভরসা।

শওকত হোসেন জানান, যখন বৈদ্যুতিক শকের কারণে তার পুরো পাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পুড়ে বিকলাঙ্গ হয়ে যায় তখন তার দুই পায়ের বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলতে হয়। পেশায় বাসচালক হওয়ায় দুই পাহীন পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে যখন তিনি বাসস্ট্যান্ডে এসে বিভিন্ন মানুষের ধারে ধারে হাত পাততে শুরু করে তখন নানাজনের নানা কটু কথা শুনে অনেক কষ্ট পান। সেই অবস্থায় তার বন্ধু-বান্ধবের প্রচেষ্টায় শ্রমিক সংগঠন ও মালিক সমিতির সহযোগিতায় ২৫ বছর বয়সে ২০০৩ সালে বাস স্ট্যান্ডের পাশে একটি চায়ের দোকান করেন। সেখান থেকে যে আয় আসে তা দিয়ে তার সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয় বলে তিনি জানান।

তিনি আরো বলেন, তার গ্রামের বাড়ি ভানের টেকিতে নিজস্ব কোন জায়গা জমি না থাকায় স্ত্রী, মেয়ে ও মাসহ চারজনের সংসার নিয়ে চলে আসে কালিয়াকৈর উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখানে এসে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছেন তিনি। স্বল্প ভাতার অসচ্ছল কার্ড থাকলেও ৬ মাস পরপর একত্রে কিছু টাকা পান তিনি। দোকানের অল্প আয় ও অসচ্ছল কার্ড এর টাকা দিয়ে তার চলতে খুব কষ্ট হয় বলে তিনি জানান। তাই এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে তিনি সহযোগিতার আবেদন করেছেন।

কালিয়াকৈর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সমাজসেবা কার্যালয় সবসময় সহযোগিতা করে থাকে, এটা সমাজসেবার কার্যালয়ের দায়বদ্ধতার একটি বিষয়। উনি যদি আমার কাছে আবেদন করেন তাহলে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে অবশ্যই সহযোগিতা করা চেষ্টা করব।

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, শওকত হোসেন সহযোগিতার আবেদন করলে আমাদের উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর এর মাধ্যমে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ