উত্তরাঞ্চলের মানুষের নৌ-পথে যোগাযোগের স্বপ্নের বালাশী-বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট। উদ্ধোধনের ২ বছর পেরিয়ে গেলেও নাব্যতার দোহাই দিয়ে আলোর মুখ দেখছে না এ ফেরিঘাটটি। খাতা কলমে বিআইডব্লিউটিএ ফেরিঘাটটি ইজারা দিলেও সেখানে নিয়মিত চলছে না কোনো ফেরি বা লঞ্চ।
সরেজমিনে দেখা যায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দিতে হচ্ছে দু-পাড়ের শত শত যাত্রীদের। তিল ধরনের ঠাঁই না থাকা নৌকাগুলোতে নেই কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি। সেই সাথে যাওয়া আসায় গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ ভাড়া।
প্রায় দেড় ‘শ কোটি টাকা ব্যয়ে নৌ-বাসসহ সকল সুবিধাযুক্ত আধুনিক ফেরিঘাট ও বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা ড্রেজিং এ ব্যায় হলেও এ পথের যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে সেই নৌকায়। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে এ পথে লঞ্চ চলাচলের উদ্ধোধন করেন সাবেক নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী। উদ্ধোধনের পর কিছুদিন নিয়মিত ছোট ৪টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করার পর দীর্ঘদিন থেকে অনিয়মিত লঞ্চ চলাচল।
স্থানীয় ও যাত্রীদের অভিযোগ, লঞ্চ চলাচলে খরচ কম হওয়ায় আশা জেগেছিল এ পথের যাত্রীদের। কিন্তু লঞ্চ চলাচল অনিয়মিত হওয়ায় খরচ হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকলেও অদৃশ্য কারণে অনেকটাই বন্ধ লঞ্চ চলাচল। যাওয়া আসায় সময় কম লাগায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দিতে হচ্ছে দু-পাড়ের কয়েক জেলার যাত্রীদের। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে প্রত্যকটি নৌকা।
রাজধানী ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে আসা যাত্রী আমিনুল ইসলাম জানান, বাস কিংবা ট্রেনে সড়ক পথে যাওয়ার অর্ধেক সময়ে এ পথে ঢাকায় যাওয়া যায় যে কারণে আমরা এ পথে যাওয়া আসা করি। কিন্তু এতো যাত্রী নিয়ে নৌকায় উঠতে ভয় লাগছে চাকরি বাচাঁতে বাধ্য হয়ে যাচ্ছি।
একই পথের যাত্রী শরিফুল ইসলাম জানান, লঞ্চের ভাড়ার চেয়ে নৌকার ভাড়া দ্বিগুণ। একজন মানুষ পারাপারে দিতে হয় ৩০০ টাকা, সাথে মোটরসাইকেল ৩০০ টাকা, আবার উঠা ও নামানোর জন্য লেবার ১০০ টাকা করে, যা অন্য ঘাটের চেয়ে অনেক বেশি। মনগড়া ভাড়া আদায় হলেও দেখার কেউ নেই।
সাধারণ মানুষের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ এর কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। আর নিরাপত্তা, সরঞ্জামাদি, অতিরিক্ত যাত্রী ও ভাড়া আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্টরা।
বালাশীঘাটের দায়িত্বে থাকা নৌ-পুলিশের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌকা চলতে দেয়া হচ্ছে না। বেশি যাত্রী দেখলে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ