লালমনিরহাটে তিন সংসদ সদস্যেসহ শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুমন খানের বাসা থেকে অজ্ঞাত ছয়জনের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল বাসার চার তলা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে। পুড়ে যাওয়ায় মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহগুলো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বলে ধারণা করছেন নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবার।
জানা যায়, সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবরে উল্লাস শুরু করেন আন্দোলনকারীসহ সাধারণ জনগণ। এ সময় জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজারসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিজয় মিছিল হয়। এসব মিছিল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের সব সংসদ সদস্যসহ শতাধিক নেতাদের বাসা বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন তারা। লালমনিরহাট ১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেনের বাসা, লালমনিরহাট ৩ (সদর) আসনের ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমানের বাসা, যুগ্ম সম্পাদক সাখওয়াত হোসেন সুমন খানের বাসাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি রাশেদ বিলাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী এপিএস মিজানের বাড়িসহ উপজেলা, ইউনিয়ন,ও গ্রাম পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের শতাধিক বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়।
সোমবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এমন ধংষযজ্ঞ চলে। অন্যদিকে শহরের মিশনমোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়া ছয় শিক্ষার্থী বিকেল থেকে নিখোঁজ বলে দাবি করছেন পরিবারের লোকজন। নিখোঁজদের পরিবার সেনা সদস্যদের সহায়তায় লাশগুলো দেখে তাদের নিখোঁজ সন্তানদের হতে পারে ধারণা করছেন । নিখোঁজ শিক্ষার্থীর রাজিবুল করিম সরকারের বাবা রেজাউল করিম জানান, বিকাল থেকে আমার ছেলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আ.লীগ নেতা সুমন খানের বাড়িতে পুড়ে যাওয়া দেহ ও কাপড়, জুতাসহ অনেক কিছু দেখে আমার ছেলের মতো মনে হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, টয়লেটের ভেতরে আগে থেকেই হয়তো ছয়জনকে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে অগ্নিকাণ্ডে তারা পুড়ে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ওমর ফারুককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নয়াশতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ