ময়মনসিংহের নরসিংদী পৌরসভার কাতেহারা মহল্লায় বাসিন্দা ফজলুল হক (৭৫) ছিলেন আর্থিকভাবে সচ্ছল। ওই বৃদ্ধের বাসায় ভাড়া থাকতেন নান্দাইল উপজেলার কালিয়াপাড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আবুল হাসান (২৫)। আর বাসাভাড়ার টাকা নিজের কাছে রাখতেন বৃদ্ধ ফজলুল হক। সেই টাকার লোভে পড়ে যায় ভাড়াটে আবুল হাসান। পরে টাকা লুট করার পরিকল্পনা করেন।
এক সময় ফজলুল হককে নিজের গ্রামের বাড়ি নান্দাইলে বেড়াতে প্রস্তাব দেন আবুল হাসান। তার প্রস্তাবে ফজলুল হক রাজি হলে গত বুধবার তাকে নান্দাইল নিয়ে আসে আবুল হাসান। পরে ওই রাতেই দা দিয়ে কুপিয়ে বৃদ্ধ ফজলুল হককে হত্যা করে আবুল হাসান। পরদিন উপজেলার কামালপুর গ্রামের ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে ওই বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে লাশ উদ্ধার হওয়ার পাঁচ দিন পর তার পরিচয় উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আবুল হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ফজলুল হককে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে পিবিআই জানিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) গৌতম কুমার বিশ্বাসসহ অন্য কর্মকর্তারা নান্দাইলের কামালপুর গ্রামে যান। সেখানে সংবাদকর্মীসহ কামালপুর গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে লাশের পরিচয় শনাক্ত ও সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে কীভাবে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হলো, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়।
নান্দাইল থানা পুলিশ সূত্র জানায়, নান্দাইল উপজেলার কামালপুর গ্রাম থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধারের পর পিবিআই লাশের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। পরে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার নাম ও পরিচয় শনাক্ত করে। নিহত বৃদ্ধের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে পিবিআই জানতে পারে, ফজলুল হক ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরে ওই বৃদ্ধকে হত্যার কারণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করে পিবিআই।
গত সোমবার রাতে আবুল হাসানকেক নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করে ময়মনসিংহের পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ফজলুল হককে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে পিবিআই দাবি করেছে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ