ঢাকা, রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাশের পাশে চিরকুটে লেখা, আল্লাহ যেন তোমাদের শাস্তি দেয়

প্রকাশনার সময়: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৭:২৮

ফেসবুকে পরিচয় অতঃপর প্রেম ভালোবাসা এবং একপর্যায়ে মাবাবার বিরুদ্ধে গিয়ে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেন। তবে সংসারে ঢুকেই যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূ।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাত ১০টার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরি পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ মাস আগে ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমে আবদ্ধ হয়ে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামের এক যুবককের সঙ্গে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্র কুড়া ইউনিয়নের আবু বক্কর সিদ্দিকের মেয়ে সুমাইয়ার। সুমাইয়ার বিয়েটি তার অভিভাবকের অসম্মতিতে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার৷ এ নিয়ে স্বামী স্ত্রী ও পরিবাবের লোকজনদের মধ্যে যৌতুক নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত। এমনকি শিপন যৌতুকের ৮ লাখ টাকার জন্য তাকে নানাভাবে শারীরিক নির্যাতনও করা হতো। এসব নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এরপর থেকেই বাবার বাড়িতেই থাকেন। গত শনিবার রাতে সুমাইয়া মনের ক্ষোভে ৭ পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে শয়নকক্ষে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

চিরকুটে সুমাইয়া লিখেন, বিয়ের গোসল টাও পেলাম না। শেষ গোসল টাও পাব না। জানাজাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সাথে থাকতে দিলা না। আল্লাহ যেনো তোমাদের শাস্তি দেয় শিপন, তোমাকে আমি অভিশাপ দিয়ে গেলাম।

তিনি আরও লিখেন, আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমার শরীরটা ভোগ করুক।

বাবা মাকে উদ্দেশ্য করে সুমাইয়া লিখেন, তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে দিও না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভুঁইয়া জানান, নিহত সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মৃতদেহের পাশেই ৭ পৃষ্ঠার একটি চিরকুট পাওয়া গেছে যা ধারণা করা যাচ্ছে আত্মহত্যার আগে সুমাইয়া নিজ হাতে এটি লিখেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একইসাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ