ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লালমনিরহাটে তিস্তায় ভাঙন, শতাধিক বসতভিটা বিলীন

প্রকাশনার সময়: ১২ জুলাই ২০২৪, ১৫:০৮ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ১৫:১২

লালমনিরহাটে তিস্তায় পানি কমে গেলেই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। সম্প্রতি বন্যার পানি কমতেই তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নে। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছেন নদী ভাঙন পরিবারগুলো।

গত ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর ডাউয়াবাড়ির অন্তত ৫০টি বাড়ি, দুটি মসজিদ ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। এ এলাকায় বসবাসরত মানুষজন নিজেদের শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। তবে তার জন্য সময় পাচ্ছেন না মুহুর্তের মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে, তাদের বসতবাড়ি।

ডাউয়াবাড়ি এলাকার স্বাধীন রহমান কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমার বাপ-দাদার ভিটে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেল বংশ বুনিয়াদদের বাড়ি বাড়ি বুঝি নিঃচিহ্ন হয়ে যাবে। তিস্তার যে আগ্রাসন শুরু হয়েছে তাতে গ্রামের পর গ্রাম বিলিন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্রামবাসী সবাই মিলে একে অপরের ঘর-বাড়ি ও আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে সহায়তা করছি।

একই এলাকার শাহিনুর রহমান জানান, গ্রামটির অন্তত ৫০ এর অধিক বাড়ি, দুটি মসজিদ ও উত্তর ডাউয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে উত্তর ডাউয়াবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অসংখ্য বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

উত্তর ডাউয়াবাড়ি এলাকার মজিবর মিয়া বলেন, তিস্তা ভাঙন কবলে পরে সর্বশান্ত হয়ে গেলাম। ভাঙন রোধ করা না গেলে হাজার হাজর পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাবে। আমাদের ত্রাণ দরকার নেই। তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা দরকার। স্থায়ীভাবে নিরাপদে বসবাস করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।

ডাউয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় আমার ছয় ওয়ার্ডে প্রায় ১৫০ বাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। চোখের সামনে গ্রামের একের পর এক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হতে থাকলেও কিছুই করা যচ্ছে না। আপদত ক্ষতিগ্রস্থদের নিরাপদ স্থানে জায়গা করে দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবে তাদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন তিস্তা পাড়ে বালির বাঁধে ধস ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে তাৎক্ষণিক পাঁচটি পরিবারের বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে ভাটিতে থাকা প্রায় ৫০ কোটি টাকার বাঁধ। পাউবো থেকে জরুরি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানিয়েছেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। তারা তালিকা করে পাঠালে এবং বরাদ্দ এলে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ঢেউটিনসহ নগদ অর্থ বিতরণ করা হবে।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ