ঢাকা, রোববার, ২৮ জুলাই ২০২৪, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২১ মহররম ১৪৪৬

তাড়াশে ২ মাসে মাত্র ১০ শতাংশ ধান-চাল সংগ্রহ

প্রকাশনার সময়: ১০ জুলাই ২০২৪, ১৬:৪৭

খাদ্য শস্য ভাণ্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ায় প্রায় দুই মাস পর ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১১২ মেট্রিক টন। পাশাপাশি একই সময়ে চাল সংগ্রহ হয়েছে ১৬৮ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ১০ শতাংশ। চাল সংগ্রহে ইতিবাচক সাড়া পেলেও ধান সংগ্রহে তেমন সাড়া পাওয়া যা‌চ্ছে না। তাই কৃষকদের সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে মাইকিংও করা হ‌চ্ছে। আর এতেও তেমন সাড়া মিলছে না।

স্থানীয় কৃষকেরা জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ধানের রোগ-বালাই তেমন না থাকা, রাসানিক সার, ডিজেল, বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকায় কৃষক নিবিঘ্নে বোরো আবাদ করতে পারায় চলতি বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলনও হয়েছে। মূলত প্রকার ভেদে বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে ২৪-২৮ মণ হারে। আবার হাইব্রীড জাতীয় ধানের ফলন হ‌য়ে‌ছে আরোও বেশি।

এ দিকে গত ৭ মে সমগ্র দেশের সঙ্গে তাড়াশ উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। সংগ্রহ অভিযান শুরু হওয়ার পর গত দুই মাসে উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১১২ মেট্রিক টন। আর এ বছর ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৪১১ মেট্রিক টন। আর ধানের সরকারি ক্রয় দর প্রতি কেজি ৩২ টাকা। বা প্রতি মণ এক হাজার ২৮০ টাকা। আর একই সময়ে চাল সংগ্রহ হয়েছে ১৬৮ মেট্রিক টন।

এ বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৪৯ মেট্রিক টন। অবশ্য, বিগত দুটি অর্থ- বছরের ধান সংগ্রহের পরিসংখ্যান বলছে তাড়াশ উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে গত ২০২২- ২৩ অর্ধ বছরে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৯৭৫ মেট্রিক টন। আর সংগ্রহ হয়েছিল মাত্র ৮১৩ মেট্রিক টন। ২০২৩- ২৪ অর্থ বছরে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭৬৯ মেট্রিক টন। আর সংগ্রহ হয়েছিল মাত্র ২০৭ মেট্রিক টন। অর্থাৎ গড়ে দুটি অর্থ বছরে চার ভাগের তিন ভাগই বোরো ধান সংগ্রহ হয়নি। আবার ২০২২- ২০২৩ অর্থ বছরে আমন ধানের মৌসুমে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার ছিল ৭৩২ মেট্রিক টন এবং ২০২৩- ২০২৪ অর্থ বছরে আমন ধানের সংগ্রহ লক্ষমাত্রা ছিল ৫০২ মেট্রিক টন। কিন্তু আমন মৌসুমে লক্ষমাত্রার বিপরীতে দুটি অর্থ বছরে এক কেজিও আমন ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

এ দিকে সরকারি খাদ্য গুদামে কৃষকদের ধান বিক্রি করতে হলে সরকারি নিয়মে কৃষককের ধানের আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ, বিজাতীয় পদার্থ ০.৫ শতাংশ. ভিন্ন জাতের ধানের মিশ্রণ ৮ শতাংশ, অপৃষ্ট ও বিনষ্ট দানা ২ শতাংশ, চিটা ০.৫ শতাংশ থাকতে হবে। এ সকল শর্ত মেনে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি কৃষকের কাছে ঝামেলা বলে মনে হয় বলে মন্তব্য করেন তাড়াশ পৌর সদ‌রের কৃষক মোহাম্মদ আলী।

সগুনা ইউনিয়‌নের লালুয়া মা‌ঝিড়া গ্রা‌মের কৃষক মো.আফছার আলী বলেন, হাট- বাজারে যখন সরকারি দরের চেয়ে আরও বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারবো তখন ঘরে ধরে ‌রে‌খেই ধান বিক্রি করবো। আর এ জন্য সরকারি গুদামে কৃষক পর্য্যায় থেকে ধান বিক্রি করতে অনিহা বেশি।

প্রসঙ্গে, তাড়াশ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ধান- চাল সংগ্রহ লক্ষমাত্রা পূরণে আমরা উদ্যোগী হয়ে কাজ করছি। সেই সঙ্গে কৃষকদের সর্বোচ্চ ঝামেলা মুক্ত রেখে ধান সংগ্রহের জন্য আমরা ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত কাজ করে যাব।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ