ঢাকা, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

অবশেষে মুক্ত হয়ে যেনো হাসছে বটগাছটি 

প্রকাশনার সময়: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৫:২৭

মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়েও যেনো হাসছে বটগাছটি। বৃষ্টিতে ভিজে বটগাছের অবশিষ্ট থাকা পাতাগুলোও যেনো নতুন জীবন ফিরে পেলো। বলছি শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরশহরের মধ্যবাজার এলাকায় খাসজমিতে থাকা শতবর্ষী বটগাছটির কথা। যে গাছটি কিছুদিন আগেও গোলাম মোস্তফা নামক এক তেল ব্যবসায়ীর অত্যাচারে প্রায় নিশ্চিহ্নের দিকে ধাবিত হচ্ছিলো। দোকানের জায়গা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিশ্চিহ্ন করতে গত দুই বছর ধরে নানা কৌশল অবলম্বন করে আসছিল দোকানের পাশে থাকা ওই তেল ব্যবসায়ী।

এ নিয়ে গত (৩০ জুন) "মধ্যরাতে কাটা হয় শতবর্ষী বটগাছ, অতঃপর.." এই শিরোনামে দৈনিক নয়া শতাব্দী অনলাইনে একটি প্রতিবেদন হয়। প্রকাশিত সংবাদটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরেই প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বটগাছটিকে ঘিরে রাখা টিনের বেড়া খুলে দিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাছটিকে অবমুক্ত করেন।

জানা গেছে, বিগত ২০২২ সাল থেকেই বট গাছটিকে নিশ্চিহ্ন করতে নানা কৌশল করে আসছিলেন গাছটির পাশের তেল ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা। গাছটিকে নিশ্চিহ্ন করতে একটু একটু করে গাছের ডাল কাটা, গাছের গোড়ায় বিষ প্রয়োগ, গাছের ছাল বাকল তুলে নেয়াসহ নানা রকম অত্যাচার গাছটির সঙ্গে করে আসছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে পাশে থাকা অন্যান্য ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করে এবং উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, অভিযোগ ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসেন এবং গাছের ডাল কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। তিন মাস আগেও পুনরায় যখন গাছটির ডালপালা কাটেন গোলাম মোস্তফা ঠিক তখনও এলাকাবাসী বাঁধা দেন এবং উপজেলা প্রশাসনকে পুনরায় তা অবগত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে গোলাম মোস্তফার কাছে গাছের ডাল কাটার কারণ জানতে চান এবং সেইসঙ্গে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন। তখন গাছটিকে আবদ্ধ করে রাখা টিনের বেড়াগুলো সরিয়ে আর গাছ কাটবেন না বলে মুচলেকা দেন গোলাম মোস্তফা।

সম্প্রতি রাতের বেলায় আবারও বট গাছটির ডালপালা কাটা শুরু করলে গাছটিকে বাঁচাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযুক্ত দোকানি গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন উপজেলা ভূমি কার্যালয়কে। পরে ভূমি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) নেজামুল হক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ বিষয়টি আদালতে পাঠান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তেল দোকানি গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রশাসনের লোকজন এসে হঠাৎ করে টিনের চালা ও বেড়া ভেঙ্গে দিয়েছে। বটগাছ খাস জমিতে থাকলেও দোকান তো আমার জায়গাতেই আছে। আর এই জায়গায় আমার আগেও আমার বাপ-দাদারা ব্যবসা করে গিয়েছেন।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, ভূমি অফিসের নায়েবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে বটগাছটিকে অবমুক্ত করেছেন। আর আদালতের অনুমতি পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং আশা করছি বটগাছটিও আস্তে আস্তে আগের রুপে ফিরে যাবেন।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ