ঢাকা, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪, ২২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জিলহজ ১৪৪৫

অবহেলায় অযত্নে, ধ্বংসের মুখে ঐতিহাসিক মুন্সিবাজার

প্রকাশনার সময়: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৪:৩০ | আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৪:৩৯

ফরিদপুর সদর গেরদা ইউনিয়নের ঐতিহাসিক মুন্সিবাজার। বর্তমান পৌরসভার ২৭নং ওয়ার্ডের মধ্যে অবস্থিত। আশপাশে আরও অনেক বাজার থাকলেও দশ গ্রামের মানুষের একমাত্র যাতায়াত ছিল এই বাজারে।

হালের পরিবর্তনে এই ঐতিহাসিক বাজারটি আজ ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়েছে। বাজারে ইজারাদারদের কারণে কমিটির গাফিলতিতে ধীরে ধীরে বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে চারদিকের মানুষ। নষ্ট হচ্ছে বাজারের পরিবেশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে চারিদিকে ময়লা আবর্জনার স্থাপনা। সেই ময়লার ভেতরে তৈরি হচ্ছে ডেঙ্গু মশা, এবং নানান ধরনের পোকা-মাকড়, কিরা। এর কারণে বাজারে চলাচল করেতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে সর্বস্তরের জনগণের। বাজারে সংলগ্ন রয়েছে দুইটি স্কুল,যেখানে শত শত ছাত্র-ছাত্রী আসা যাওয়া। বাজারের পরিবেশের কারণে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি পড়তে হচ্ছে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের। বাজার ঢুকার পথে রয়েছে, পুলিশ বক্স তবে নেই কোন কার্যক্রম। দীর্ঘ দিন রাস্তা জুড়ে পড়ে রয়েছে অকার্যভাবে। পথচারীদের যাতায়াতসহ যানবাহন চালালে পড়তে হচ্ছে অসুবিধায়। বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের পাহাড় সমান অভিযোগ থাকলেও এই বিষয়ে কারো কোন প্রকার মাথা ব্যথা নেই।

ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক, মুন্সিবাজার হাই স্কুলের সভাপতি ঈমান আলী মোল্লা বলেন, একটি এলাকার বা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব আমার আপনার সবার, সবার উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে সেটা পালন করা। বাজারটির যে পরিবেশ এর প্রদান কারণ বাজারে থেকে ময়লা আবর্জনা পানি বের হওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায়। আর এর কারণে স্কুলের ওপর প্রভাব পড়ছে। চারিদিকের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

বাজারের বর্তমান ইজাদার অপু নামে একজন ব্যক্তি, তার সঙ্গে এই বিষয়ে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, আমার লাইন্সেস নিয়ে অন্যরা কাজ করে, আপনার সঙ্গে পরে কথা বলবো বলে লাইন কেটে দেন। বাজার কমিটির সভাপতি শহীদ মোল্লা বলেন, আগে যে পরিমাণ লোকজন বাজারে বিভিন্ন মালামাল বিক্রির করার জন্য আসতো। বেশি পরিমাণে খাজনা তোলার কারণে তিন ভাগের এক ভাগ লোক বাজারে আসেনা। পৌরসভা থেকে বাজারটি জন্য কিছু বরাদ্দ করলেও সেটা ঠিকমত পাওয়া যায় না। আমার কি করার আছে।

বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন কুন্ডু বলেন, নিজের পকেটের টাকা দিয়ে বেশ কয়েকবার বাজারটির পরিবেশ রক্ষায় কাজ করিয়েছি। কেউ এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেনা আমি একা কি করবো।

জানা যায়, বাজারে ডাক যে পরিমাণ টাকা দিয়ে নেয়া হয়েছে, সেই পরিমাণ টাকা না ওঠার কারনে বাজারের এই অবস্থা। হিংসা প্রতি হিংসা থাকার কারনে কেউ কোন প্রতিবাদ করে না। যে যার ইচ্ছা মত চলছে।

বাজারে একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজার কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে যখন যা দাবি করেন সেটা আমরা দিয়ে থাকি। বাজারের এই অবস্থার জন্য তো আর আমরা দায়ি না। বরং বাজারে যারা দায়িত্বরত রয়েছেন তারা যদি শক্ত হাতে প্রতিবাদ করেন বা উদ্যেগ নেয় তাহলে বাজারে অবস্থা আগের জায়গায় ফিরে আসবে। বর্তমান এমন পরিস্থিতি হয়েছে দোকানে বসে থাকতে পারি না দুর্গন্ধে, দোকানে ডুকে পড়ে বিভিন্ন পোক-মাকর। বেচাকেনার পরিমাণ ধীরে ধীরে খাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লোকজন বাজারে না আসলে বেচাকেনা হবেই বা কি ভাবে।

তারা আর ও জানায়, বাজারে নেই কোন চলাচল করা রাস্তা, নেই কোন টয়লেট, নেই কোন বাজারে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা। এককথায় কারো কোন পদক্ষেপ না থাকায় ধীরে ধীরে হারিয়ে চলছ ঐতিহাসিক নামকরা মুন্সিবাজারটি।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ