ঢাকা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ১ রবিউস সানি ১৪৪৬

‘ঘর বাড়ি সব নদীতে লইয়া গেছে’ 

প্রকাশনার সময়: ২৭ জুন ২০২৪, ১৮:০১

‘ঘর-বাড়ি সব নদীতে লইয়া গেছে। এহন পিছাইতে পিছাইতে আর কোনো জায়গা সম্পত্তি নাই। এহন শুধু আছি আমরা। যাওয়ার মত মতো কোনো জায়গা নাই। যে বেড়িবাঁধ দিছে , তাতেও কোনো কাজ হয় নাই। তাও নদীতে লইয়া গেছে। স্থায়ীভাবে আমাগো কিছু কইরা দেউখ সরকার।’

কথাগুলো বলছিলেন পটুয়াখালী বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের জাহানারা বেগম (৫০)। কারখানা নদীর ভাঙনে তিনি গত কয়েক বছরে হারিয়েছেন বসতবাড়ি, কৃষিজমিসহ মূল্যবান গাছপালা। এখন যে কোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে জাহানারা বেগমের বর্তমান ঘরটিও। এই এলাকার নদীপাড়ের অধিকাংশ মানুষের জীবনচিত্র এমনই। অনেকেই এখন ঘর-বাড়ি ফেলে চলে যাচ্ছে অন্যত্র জায়গায়।

একই এলাকার সুজন সরদার বলেন, ‘৭০ বছর ধইরা নদী ভাঙতেছে, এখন পর্যন্ত কোনো কাজ হয় নাই। এই ৭বার আমার ঘর-বাড়ি ভেঙেছে, পোতা-ভিডা সব লইয়া গেছে । এবার যদি লইয়া যায় নদীতে ভাসা ছাড়া কোনো উপায় নাই।’

বর্ষা মৌসুমে শুরু হওয়ার পর কাছিপাড়া ইউনিয়নের চর রঘুনদ্দিন, বাহেরচর, গোপালিয়া ও পশ্চিম কাছিপাড়া গ্রাম এবং নাজিরপুর ইউনিয়নের নিমদি, চন্দ্রদ্বীপের চরব্যারেট, চরওয়াডেলে নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিনিয়ত বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসতবাড়ি, কৃষিজমি ও গাছপালা। বর্তমানে নদী ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন কারখানা ও তেতুলিয়া নদীর তীরবর্তী প্রায় ৩ হাজার পরিবার।

পশ্চিম কাছিপাড়া গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, ‘বাকেরগঞ্জে থানায় নদী ভাঙনের পরে বাউফলে বাড়ি করেছিলাম, তাও নদীতে চইল্লা গেছে । এহন মোল্লা বাড়ি অন্যের জমিতে থাহি। আমাগো সরকার কোনো সাহায্য সহযোগিতা করে নাহ।’

কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, হাজিপুর নামে পুরো একটি গ্রামসহ শত শত ঘরবাড়ি নদীর অতল গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । কাছিপাড়া ইউনিয়নের বাহেরচর ও গোপালিয়া বাজার, চর রঘুনদ্দিন, হিস্যাজাত, পশ্চিম কাছিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম কাছিপাড়া দারুচ্ছুন্নাত দাখিল মাদ্রাসা কারখানা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, গত শুক্রবারে আমি কাছিপাড়া ইউনিয়নের নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছিলাম, ছবি ও ভিডিও করে নিয়ে আসছি। ওখানে পার্মানেন্ট বেড়িবাঁধের দরকার, সেটা অনেক খরচের বিষয়। পরিকল্পনা পাশ করতেও সময় লাগবে। নদীর গভীরতা মেপে দ্রুত একটা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নয়াশতাব্দী/এনএইচ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ