ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সুনামগঞ্জে ২০২২ সালের ভয়াল বন্যার পুনরাবৃত্তির আতঙ্ক 

প্রকাশনার সময়: ১৯ জুন ২০২৪, ০৯:২৮

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অবিরাম বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় এবার হাওরাঞ্চলের মানুষের ঈদের আনন্দ মাটি হয়েছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে গেলবারের মতো ভয়াল বন্যার আশঙ্কা।

সোমবার (১৭ জুন) ঈদের দিন ভোরেই সুরমা নদীর পানি উপচে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার মধ্যেই মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করতে পারলেও অনেকেই যথাসময়ে পশু কোরবানি করতে পারেননি। বৃষ্টি থামার পর দুপুর থেকে পানি কিছুটা কমতে শুরু করে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার এ তথ্য জানান।

তিনি আরও জানান, সুনামগঞ্জের ষোলগড় পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সুরমা নদীর পানির গতি বেশি ছিল। এছাড়া ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ও তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর পানির গতি আগের চেয়ে কমেছে। রাত ১১টার পর থেকে বৃষ্টিপাত বাড়বে। সেইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হু হু করে পানি বাড়ায় জেলার পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক, দোকান ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকেছে। জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় পানি বাড়ায় বেলডুল, অনন্তপুর, ফহেতপুর, রাধানগর, দরেরপাড়, পেয়ারী নগর, পদ্ম নগর, ভাটিপাড়া, ললিয়ারপুর, কৈয়ারকান্দা, বাঘমারা, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের ৮ শতাধিক অসহায় পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে চলে গেছে। জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, ধর্মপাশা, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারাবাজারসহ নিম্নঞ্চলের বসতবাড়ি, দোকান, চলাচলের সড়ক, মসজিদ, মন্দির পানিতে ডুবে গেছে। বসতবাড়ি ও দোকানের মালামাল রক্ষায় উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় আছে নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষজন।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জানান, ঢলের পানি ভাটির দিকে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় হু হু করে বাড়ছে পানি। যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এতে ২০২২ সালের বন্যার মতোই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ বন্যার আতঙ্কে উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান জানান, পানি বাড়ায় উপজেলার ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮০০ মানুষ অবস্থান করছেন। দিনভর বন্যাকবলিত মানুষদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল থেকে সুনামগঞ্জে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরের পর বৃষ্টি থেমে যায়। এসময় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা কিছুটা কমে এলেও শহরের ভেতরের অন্য অনেক এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করে। নিচু এলাকাগুলোর বাসাবাড়ির ভেতর আগেই পানি প্রবেশ করেছে। তুলনামূলক উঁচু কয়েকটি এলাকাতেও সন্ধ্যার দিকে পানি উঠতে শুরু করে বলে জানা যায়। এছাড়া জেলা সদরের আশপাশের বিভিন্ন এলাকার সংযোগ সড়কও তলিয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বন্যা পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/জিএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ